বাড়িতে বেশ কয়েক মাস ধরে কাজের সূত্রে রাজমিস্ত্রি শেখর রায়ের সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল অনন্যা কর্মকারের। আবার অনন্যার জা রিয়া কর্মকারের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল আরেক রাজমিস্ত্রি শুভজিৎ দাসের। বুধবার ভারতের পুলিশ আসানসোল স্টেশনে মুম্বাই মেল থেকে ওই দুই বধূকে আটক করেছে। পাশাপাশি শেখর এবং শুভজিৎকে অপহরণের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার তাদের আদালতে হাজির করানো হবে। আদালতে হাজির করানো হবে ওই দুই গৃহবধুকেও।
অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পেরেছে, শেখর সমশেরগঞ্জ থানার নিমতিতার বরজডিহির বাসিন্দা। আর শুভজিৎ সমশেরগঞ্জেরই হাসিমপুরের বাসিন্দা। গত ১৫ ডিসেম্বর ‘নিখোঁজ’ হন অনন্যা এবং রিয়া। জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পেরেছে, ওই দুই বধূকে নিয়ে মুর্শিদাবাদে রাত কাটিয়ে ধৃতেরা পর দিন রওনা দেন মুম্বাই। তবে শেখর এবং শুভজিৎ কী উদ্দেশ্যে তাঁদের মুম্বাইয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আটককৃত ওই দুই রাজমিস্ত্রী দুই বধুকে বিক্রি করে দেওয়ার ছক কষেছিল কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
তদন্তে নেমে পুলিশ নিখোঁজদের মোবাইল ট্র্যাক করতে শুরু করে। সেই সময়েই জানা যায় ওই দুই বধূ মুম্বইয়ে রয়েছেন। ফোনে আড়ি পেতে পুলিশ এ-ও জানতে পারে, পাঁচ জনে মিলে মুম্বই গেলেও তাঁদের হাতে টাকাপয়সা প্রায় নেই। এর পর পুলিশ এ-ও জানতে পারে, পাঁচ জনই মুম্বই মেলে সওয়ার হয়ে ফিরছেন রাজ্যে। বুধবার সকালে আসানসোল জিআরপি-কে সঙ্গে নিয়ে এক শিশু-সহ পাঁচ জনকে আটক করে নিশ্চিন্দা থানার পুলিশ। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, বুধবার আসানসোলে নেমে দুই বধূকে নিয়ে বাসে চড়ে মালদহ হয়ে মুর্শিদাবাদ যাওয়ার ছক কষেছিল ধৃতেরা। তবে তার আগেই ধরা পড়ে যেতে হয় সকলকে।
গত ১৫ ডিসেম্বর শীতের পোশাক কেনার নাম করে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন বালির নিশ্চিন্দার বাসিন্দা অনন্যা, তাঁর জা রিয়া এবং রিয়ার সাত বছরের ছেলে আয়ুষ। এর পর থেকেই ওই তিন জনের কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। বিপাকে পড়ে নিশ্চিন্দা থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করে কর্মকার পরিবার। তদন্তে নেমে বিস্ফোরক তথ্য সামনে আনে পুলিশ। জানা গিয়েছে, ওই দুই বধূ দুই রাজমিস্ত্রির হাত ধরে মুম্বই চম্পট দিয়েছেন। পুলিশ জানতে পারে, মুর্শিদাবাদের সুতি থেকে বালিতে কাজ করতে এসেছিলেন সুভাষ এবং শেখর নামে দুই রাজমিস্ত্রি। ওই দু’জন কর্মকার পরিবারে পাঁচ-ছয় মাস রাজমিস্ত্রি হিসাবে কাজ করেন বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। সেই সময়ে অনন্যা এবং রিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক হয় দু’জনের। প্রেমালাপ চালানোর জন্য সুভাষ তাঁদের ফোনও কিনে দেন। কর্মকার পরিবারের প্রতিবেশীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, দুই বধূকে আর কোনও ভাবেই ওই পরিবারে ফিরিয়ে নিতে রাজি নয়। তবে আয়ুষকে তার বাবার পরিবার ফেরত পেতে চায়। সুত্র: আনন্দবাজার