স্বামী সিঙ্গাপুরে থাকায় প্রতিবেশী শফিকুলের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন মোরশেদা। শারীরিক মেলামেশাও হয় তাদের। তবে নানা ধরনের রোগ থাকায় মোরশেদাকে কখনোই শারীরিক তৃপ্তি দিতে পারেননি শফিকুল। তবু ফের করতে চান শারীরিক সম্পর্ক। কিন্তু ‘তুষ্ট’ করতে না পারায় প্রেমিক শফিকুলকে নিজের ওড়না দিয়ে মুখ চেপে ধরে খুন করেন প্রেমিকা।
টাঙ্গাইলের নাগরপুরে শফিকুল ইসলাম হত্যায় ৩৩ বছর বয়সী মোরশেদা আক্তারের জবানবন্দিতে বেরিয়ে আসে এসব চাঞ্চল্যকর তথ্য। একই সঙ্গে এ হত্যার রহস্য উদঘাটন করে পুলিশ।
টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সারের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তির বরাত দিয়ে শুক্রবার দুপুরে এ তথ্য জানান মির্জাপুর-নাগরপুর সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার এসএম মনসুর মুছা।
মোরশেদা নাগরপুর উপজেলার পাকুটিয়া ইউনিয়নের মানড়া নয়াপাড়া গ্রামের সিঙ্গাপুর প্রবাসী বাবুল হোসেনের স্ত্রী। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে বৃহস্পতিবার দুপুরে মোরশেদার দেবর বারেক ও ভাসুর ফুলচানকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
স্বীকারোক্তিতে মোরশেদা জানান, এক বছর ধরে সিঙ্গাপুরে থাকেন তার স্বামী বাবুল। এরপর প্রতিবেশী সমেশ আলীর ছেলে ৪৫ বছরের শফিকুল ইসলামের সঙ্গে তার সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। এক সময় গড়ে ওঠে প্রেম। সম্প্রতি তার সঙ্গে শারীরিক মেলামেশা করেন শফিকুল। কিন্তু তিনি নানা ধরনের রোগে ভুগছিলেন। এ কারণে কখনোই তাকে শারীরিক তৃপ্তি দিতে পারেননি।
১৮ জুলাই বিকেলে ফের মোরশেদার বাড়িতে যান শফিকুল। ওই সময় বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে মোরশেদার সঙ্গে শারীরিক মেলামেশার চেষ্টা করেন তিনি। এ নিয়ে বাড়ির টিউবওয়েলের কাছে দুজনের কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে ধস্তাধস্তি হয়। এ সময় শফিকুল পড়ে যান। পরে নিজের ওড়না দিয়ে শফিকুলের মুখ চেপে ধরেন মোরশেদা। এতে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। পরে তার মরদেহ পাশের টয়লেটে লুকিয়ে রাখেন মোরশেদা। এছাড়া বিষয়টি দেবর বারেক ও ভাসুর ফুলচানকে জানান তিনি। তারা মরদেহ লুকানোর সিদ্ধান্ত নেন। ওই দিন রাত প্রায় ১২টার দিকে মরদেহ চটের বস্তায় ভরে বারেকের অটোরিকশায় উঠিয়ে গ্রামের একটি সেতুর নিচে ফেলে রাখেন তারা।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ১৯ জুলাই সকালে নাগরপুর উপজেলার মানড়া নয়াপাড়া গ্রামের সেতুর নিচ থেকে অজ্ঞাতপরিচয়ে বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে মরদেহটি শফিকুলের বলে শনাক্ত করেন স্ত্রী রাহেলা বেগম। এরপর নাগরপুর থানায় হত্যা মামলা তিনি।
মামলার পর ঘটনাটির তদন্ত শুরু করেন নাগরপুর থানার এসআই মনোয়ার হোসেন। উন্নত তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় ও সনাতন পদ্ধতির পুলিশি কৌশল ব্যবহার করে দ্রুত এ ঘটনার রহস্য উদঘাটন করেন পুলিশের এ কর্মকর্তা। একই সঙ্গে বাকি অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়েছে।