কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে কুড়িগ্রামের সবকটি নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। ইতিমধ্যে ধরলা নদীর পানি বিপৎসীমার ৩৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। দ্রুত পানি বাড়ছে দুধকুমার নদে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা এবং গংগাধরেও। পানি বাড়ায় কুড়িগ্রাম সদর, রাজারহাট, ফুলবাড়ী, নাগেশ্বরী, ভূরুঙ্গামারী ও উলিপুর উপজেলার প্রায় অর্ধশত চর এবং নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। চতুর্থ দফার এই বন্যায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন এসব এলাকার প্রায় ৪০ হাজার মানুষ। শত শত একর রোপা আমনের ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। পানি দীর্ঘস্থায়ী হলে এসব আমন ক্ষেত নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছে কৃষকরা।
আগামী ২-৩ দিন পানি আরও বাড়তে পারে বলে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে।
নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধির পাশাপাশি বিভিন্ন এলাকায় চলছে তীব্র ভাঙন। কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার হলোখানা ইউনিয়নের সারডোব গ্রামের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ৩০ মিটার অংশ ভেঙে অন্তত ১০টি গ্রাম নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। তিস্তা নদীতে তীব্র ভাঙন চলছে উলিপুরের থেতরাই, চরবজরা ও গাইবান্ধা জেলার বিচ্ছিন্ন অঞ্চল কাশিমবাজারে। সেখানে যোগাযোগের একমাত্র পাকা সড়কের তিন মিটার নদীগর্ভে চলে গেছে। এছাড়াও চারটি বাড়ি নদীগর্ভে গেছে। ভাঙনের মুখে রয়েছে আরও ৩০টি বাড়ি। ধরলার ভাঙনে হুমকির মুখে রয়েছে সদর উপজেলার মোগলবাসা বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুল ইসলাম জানিয়েছেন, উজানে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় আগামী ২-৩ দিন পানি আরও বাড়তে পারে। এরপর পানি কমবে। এছাড়া নদীভাঙন প্রতিরোধে বিভিন্ন এলাকায় জরুরি ভিত্তিতে জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানান, হঠাৎ করে ধরলা নদীতে অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধি হয়েছে। পানি বৃদ্ধির ফলে আবার বন্যার কবলে পড়েছে ধরলা নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষ ও বিভিন্ন ফসলাদি। সংশ্লিষ্ট বিভাগকে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের জন্য বলা হয়েছে।