৪ জেলায় পরমানু কৃষি গবেষণা ইনষ্টিটিউট (বিনা) উদ্ভাবিত ঔষধি গুনে ভরা বিনা মুগ-৮ এর বাম্পার ফলন হয়েছে।
প্রতি হেক্টরে এ জাতের মুগ ১.৭ টন ফলন পেয়ে কৃষক লাভবান হয়েছে বলে গোপালগঞ্জ বিনা উপকেন্দ্র জানিয়েছে। আগামীতে লাভজনক এ জাতের মুগের আবাদ আরো সম্প্রসারিত করতে কৃষক আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
এ ডালে মাংসের সমান, ডিমের দ্বিগুন ও দুধের চেয়ে ৭ গুন বেশি প্রোটিন রয়েছে। এতে ক্যানসার ও রক্তের উচ্চ চাপ প্রতিরোধক এ্যামাইনো এসিড আছে। এ ডাল ম্যালিগ্রান্ট টিউমার প্রতিরোধক এন্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ।
গোপালগঞ্জ বিনা উপকেন্দ্র জানিয়েছে, বিনার হাওর, চর, দক্ষিণাঞ্চল ও বরেন্দ্র এলাকার উপযোগী ফসলের জাত ও ব্যবস্থাপনা প্রযুক্তি উদ্ভাবন এবং অভিযোজন কর্মসূচী আওতায় গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, রাজবাড়ী ও শরীয়তপুর জেলার ১৫০ একর জমিতে এ জাতের মুগ ডালের ৩শ’টি প্রদর্শণী প্লট করে কৃষক। বিনা এসব কৃষককে বিনামূল্যে বীজ, সার, ও কীটনাশক দিয়েছে। পাশাপাশি বিনা মুগ চাষাবাদের কলাকৌশল শিখিয়েছে। প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দিয়েছে।
গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার কৃষক সঞ্জিত মন্ডল বলেন, স্থানীয় জাতের মুগ চাষ করে হেক্টরে ৬ শ’ কেজি ফলন পাওয়া যায়। কিন্তু বিনামুগ-৮ চাষ করে ১.৭ টন ফলন পেয়ে লাভবান হয়েছি। এ জাত পরিবেশ সহনশীল। এতে পোকা মাকড়ের আক্রমন কম হয়। এ কারণে উৎপাদন খরচও কম লেগেছে। আমার দেখাদেখি আশপাশের অনেক কৃষক আগামী বছর এ মুগ চাষের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
বিনা গোপালগঞ্জ উপ-কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোঃ রবিউল ইসলাম আকন্দ বলেন, এ মুগে মাংসের সমান, ডিমের দ্বিগুন ও দুধের চেয়ে ৭ গুন বেশি প্রোটিন রয়েছে। এতে ক্যান্সার ও রক্তের উচ্চ চাপ প্রতিরোধক এ্যামাইনো এসিড আছে। তাই ক্যান্সার প্রতিরোধ করে ও হার্টকে সুস্থ্য রাখে। এ ডাল ম্যালিগ্রান্ট টিউমার প্রতিরোধক এন্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। এন্টিঅক্সিডেন্ট ডায়বেটিস প্রতিরোধ করে। এর ভিটামিন বি-১, বি-৫, বি-৬ ও সিএ দেহের ওজন কমায়। মানব দেহের জন্য প্রাণীজ আমিষের চেয়ে উদ্ভিজ্জ আমিষ শ্রেয়।
টুঙ্গিপাড়া উপজেলার কুশলী ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মাহফুজ আলম বলেন, বিনা উদ্ভাবিত মুগ সহ বিভিন্ন জাতের ফসলের আবাদ করে কৃষক অধিক ফলন পেয়ে লাভবান হচ্ছেন। তাই কৃষকদের মধ্যে বিনার জাত আবাদে দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে।
গোপালগঞ্জ বিনা উপ-কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ড. মোঃ বেলাল হোসেন বলেন, আমাদের উদ্ভাবিত জাত পরিবর্তিত পরিবেশের সাথে খাপখাইয়ে সবোর্চ্চ ফলন দিতে সক্ষম। বিনামুগও তাই বাম্পার ফলন দিযেছে। গোপালগঞ্জ সহ আশপাশের জেলাগুলোতে এ বিনা উদ্ভাবিত জাতের চাষাবাদ সম্প্রসারণ করে আমরা কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি করতে কাজ করে যাচ্ছি।
গোপালগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণের জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা কৃষিবীদ হরলাল মধু বলেন, বিনা গোপালগঞ্জ ও আশপাশের জেলা গুলোর কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি ও কৃষকের আর্থসমাজিক উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। এতে এ অঞ্চলে কৃষির নীবিড়তা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এটি আমাদের কৃষক ও কৃষির জন্য সুখবর।–সময়ের কন্ঠস্বর