পটুয়াখালীতে চুরির অভিযোগে সুমন চৌকিদার (১৩) নামে এক মাদ্রাসার শিক্ষার্থীকে মুখে স্কচটেপ লাগিয়ে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে হাসপাতালে পাঠিয়েছেন ওই মাদ্রাসার এক শিক্ষক।
মুমূর্ষু অবস্থায় সুমন পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের সার্জারি বিভাগে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
স্থানীয়দের সহায়তায় পুলিশ অভিযুক্ত শিক্ষক আহসান উল্লাহকে আটক করে জেলে পাঠিয়েছে। এ ঘটনায় সুমনের মা মোসা. রেহেনা বেগম সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
সুমনের মা জানান , অনেক কষ্টে সুমনকে হেতালিয়া বাঁধঘাট বায়তুল আহাদ আকন বাড়ি হাফিজিয়া মাদ্রাসায় ভর্তি করেন। সেখানে সুমন নিয়মিত ক্লাস করে আসছে।
বৃহস্পতিবার ওই মাদ্রাসার শিক্ষক আহসান উল্লাহের দুই হাজার টাকা খোয়া যায়। এ ঘটনায় শিক্ষক সুমনকে সন্দেহ করে তার রুমে ডেকে নিয়ে বেত্রাঘাত করেন।
তিনি জানান, সুমনকে পেটানোর এক পর্যায় ব্যবহৃত বেতটি ভেঙ্গে গেলে শিক্ষক আহসান একটি লোহার রড এনে পুনরায় পেটানো শুরু করেন। এ সময় সুমন ডাক-চিৎকার শুরু করলে শিক্ষক অন্য ছাত্রদের গলা চেঁচিয়ে শব্দ করে পড়ার নির্দেশ দেয়। সুমনের কান্নার শব্দ ছড়িয়ে যাওয়ার ভয়ে মুখে স্কচটেপ লাগিয়ে তৃতীয় দফা পেটায়।
শিশুর মা জানান, পিটুনি শেষে শিক্ষক সুমনকে কাপড় দিয়ে হাত-পা বেঁধে একটি কক্ষে আটকে রেখে শিক্ষক আহসান তার মৃত দাদীর জানা যায়, সদর উপজেলায় আউলিয়াপুরে অংশ নিতে যায়।
ঘটনার দেড় ঘণ্টা পরে সুমনের সহপাঠি ও ফুফাতো ভাই আকাশ পালিয়ে সুমনের পরিবারকে জানায়।
খবর পেয়ে সুমনের পরিবার সুমনকে উদ্ধার করতে আসলে শিক্ষকের বাধার মুখে পড়ে। এ সময় স্থানীয়দের সহায়তায় সুমনকে উদ্ধার করে পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে।
সরেজমিনে দেখা গেছে সুমনের গোটা শরীরে আঘাতের চিহ্ন এবং রক্তাক্ত হয়ে আছে।
হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. সেলিম মাতব্বর জানান, সুমনের শরীরে মাংসের ভিতরেও অনেক আঘাত লেগেছে। তাই সুস্থ হতে কিছুটা সময় লাগবে।
সদর থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান জানান, নির্যাতনের খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। স্থানীয়দের সহযোগিতায় অভিযুক্ত শিক্ষককে আটক করা হয়েছে। তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এ ঘটনায় শিশুটির মা বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন বলে ওসি জানান।