প্রবাসী স্বামীর কস্টার্জিত ৪৫ লক্ষ টাকা আর ৩ শত গ্রাম স্বর্ণ আত্মসাত করে তালাক নামা পাঠানোর অভিযোগ উঠেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের এক শিক্ষিকার বিরুদ্ধে।
অভিযুক্ত শিক্ষিকা জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার সেলিমাবাদ এলাকার আব্দুর রহিম মেকারের মেয়ে হীরা খাতুন (৩৮)।
জানা যায়, ২০০৬ সালে শিবগঞ্জ উপজেলার কালুপুর গ্রামের আসাদুর রহমান মাস্টারের ছেলে কামরুজ্জামান ওরফে কামরুলের সাথে হীরা খাতুনের বিয়ে হয়। বিয়ের সময় আগের স্বামীর ছেলে সন্তান নিয়ে হীরা খাতুন নতুন স্বামী কামরুলের বাসায় উঠে। বিয়ের কিছুদিন পর কামরুল কাজের সন্ধানে সিঙ্গাপুর চলে যান। সেখানেই ১৩ বছর ধরে তিনি প্রবাসী।
কামরুল জানান, বিয়ের পর থেকেই স্ত্রী হীরা খাতুন আমাদের যৌথ পরিবারে থাকতে চান না । স্ত্রীর কথামত তিনি (কামরুল) পিতার বাড়ি ত্যাগ করে ভাড়া বাড়িতে উঠেন।
কামরুল জানান, তিনি এখন নিঃস্ব। কষ্টার্জিত সবকিছু হাতিয়ে নিয়ে হীরা খাতুন তাকে পথে বসিয়েছে। তিনি (কামরুল) বলেন, ২০১০ সালে স্ত্রী হীরা খাতুনকে প্রায় ২ লক্ষ টাকা খরচ করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকের চাকুরী নিয়ে দেন। ডিভোর্স দেয়ার কারণ হিসেবে কামরুল বলেন, তার (হীরা খাতুন) এক সহকর্মীর সাথে পরকীয়ার কথা উল্লেখ করেন।
এইমর্মে কামরুজ্জামান ওরফে কামরুলের মা জায়েদা বেগম বাদী হয়ে হীরা খাতুন, তার (হীরা) পিতা আব্দুর রহিম, ভাই সেলিম রেজা, বোন নাসিমা খাতুন ও সহকর্মী (বন্ধু) আব্দুল হান্নান মোট ৫ জনকে বিবাদী করে বিজ্ঞ আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন। বিজ্ঞ আদালত মামলাটি আমলে নিয়েছেন বলে জানান বাদীর কৌসুলী এ্যাডভোকেট ড. তসিকুল ইসলাম।
মামলাসুত্রে জানা যায়, বাদীর ছেলে কামরুজ্জামান ওরফে কামরুল ১৩ বছর ধরে বিদেশে থেকে যা রোজগার করেছেন, তার সব টাকায় স্ত্রী হীরা খাতুনকে দিয়েছেন। ২০০৭-২০০৯ সালের মধ্যে হুন্ডির মাধ্যমে পাঠানো প্রায় ১০ লক্ষ টাকা, ১ জানুয়ারি ২০১০ হতে ২৬ জুন ২০১৬ এর মধ্যে ব্যাংকের মাধ্যমে পাঠানো ৩৪ লক্ষ ৯৪ হাজার ৫ শত ৬২ টাকা, ৩ শত গ্রাম স্বর্ণ ও বিভিন্ন দামী আসবাবপত্র আত্মসাতের উদ্দেশ্যে হীরা খাতুন অন্য বিবাদীদের পরস্পর যোগসাজসে হাতিয়ে নিয়ে কামরুলকে ২০১৮ সালের ২৩ নভেম্বর তালাকনামা পাঠিয়েছে।
বাদীর ছেলে কামরুল (হীরার স্বামী) তালাক দেয়ার কথা শুনে বিদেশ থেকে এসে টাকা, স্বর্ণ ও অন্যান্য দামী আসবাবপত্র ফেরত পাবার লক্ষ্যে গত ৩০ নভেম্বর ২০১৮ শুক্রবার বাদীর বাড়িতে হীরাসহ অন্যান্য বিবাদী ও স্বাক্ষীদের উপস্থিতিতে একটি সালিশ করেন। সালিশে ব্যাংক এ্যাকাউন্ট ও হুন্ডির মাধ্যমে উল্লিখিত টাকা, স্বর্ণ ও অন্যান্য আসবাবপত্র তাদের নিকট আছে বলে স্বীকার করে হীরাসহ অন্যান্য বিবাদীগণ। নিজেদের কাজে সকল টাকা, স্বর্ণ ও অন্যান্য আসবাবপত্র ব্যবহার করেছি মর্মে ফেরৎ দিবেনা বলে সাফ জানিয়ে দেয় বিবাদীগণ। বেশী বাড়াবাড়ি করলে বাদী ও বাদীর ছেলেকে খুন জখম করারও হুমকি দেয় বিবাদীগণ।
মামলায়, একটি ছেলে সন্তান থাকা সত্বেও হীরা খাতুন নিজেকে কুমারী দাবি করে প্রতারণা করেছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে। এ বিষয়ে বিবাদী হীরা খাতুনের বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি কোন বক্তব্য দিতে রাজি হননি। তিনি (হীরা) নিউজ করলে প্রতিবেদককে দেখে নেয়ারও হুমকি দেন