গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে গৃহবধূ রেহেনাকে হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। স্বামী শাকিলুর জামান রাজন ও তার বন্ধু আনারুল ইসলাম দুজনে মিলে স্ত্রীকে খুন করে বলে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে তারা।
জবানবন্দিতে রাজন ও আনারুল জানায়, করতোয়া মরা নদীর পাড়ে রেহানার সম্মতিতেই শারীরিক মেলামেশা করে তার স্বামী। সেটা দেখে ফেলে আনারুল। এরপর স্বামীই আনারুলের সঙ্গে রেহেনাকে শারীরিক সম্পর্ক করতে বাধ্য করে। মেলামেশার পর নদীতে গোসলের সময় দুজন মিলে রেহেনাকে প্রথমে ডুবিয়ে হত্যা করে। এরপর তার মরদেহ নদী থেকে তীরে তুলে এনে আনারুল ছুরি দিয়ে গলা ও দুই স্তন কেটে আলাদা করে পানিতে ফেলে দেয়।
স্বামী রাজনের সঙ্গে থাকা কুড়াল দিয়ে আনারুল নিহত রেহানার দু’হাত কেটে শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করে কচুরিপানার মধ্যে ফেলে দেয়। রেহানার বাকি শরীরটা কচুরিপানার মধ্যে লুকিয়ে রেখে দু’জনে নিজ নিজ বাড়িতে চলে যায়।
তারা দুজনেই অত্যন্ত ঠাণ্ড মাথায় এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ড সম্পন্ন করে বলে সোমবার গোবিন্দগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পার্থ ভদ্রের আদালতে জবানবন্দি দেয় তারা।
জবানবন্দিতে শাকিল বলেন, ‘১৩ বছরের সংসার জীবনে সামান্য মনোমালিন্যের কারণে বন্ধুর সহযোগিতায় গত ২৪ জানুয়ারি রাত ১০টার দিকে গুমানীগঞ্জ ইউনিয়নের গুমানীগঞ্জ মীরকুচি মদনতাইড় নামক স্থানে স্ত্রীকে হত্যা করে সে। আর ঘটনার দুদিন আগে মাত্র ১৫০০ টাকার বিনিময়ে বন্ধু আনারুলকে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানোর জন্য ভাড়া করে সে।’
গত ১ ফেব্রুয়ারি দুপুরে স্থানীয়রা কচুরিপানার নীচে রেহেনার মরদেহ দেখতে পেয়ে থানায় খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়। এরপর তদন্তের এক পর্যায়ে ওই দিনই রেহানার শ্বশুরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে নিজের ছেলেই এ হত্যার সঙ্গে জড়িত বলে পুলিশকে জানায়।
পড়ে পুলিশ তার দেয়া তথ্যে দুদিন অভিযান চালিয়ে কুড়িপাইকা এলাকা থেকে শাকিলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর ৩ ফেব্রুয়ারি গোবিন্দগঞ্জ শহরের মাছবাজার এলাকা থেকে তার বন্ধু আসামি আনারুলকেও গ্রেপ্তার করা হয়। দুই আসামির দেয়া তথ্যে ঘটনাস্থল থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহার করা ছুরি ও রাজনের বাড়ি থেকে কুড়ালটি উদ্ধার করা হয়।
গোবিন্দগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএকেএম মেহেদী হাসান জানান, ‘দুই আসামিই মাদকাসক্ত। তাদেরকে গ্রেপ্তারের পর আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।’