২০ জানুয়ারি রাত সাড়ে ৯টার দিকে জাহাঙ্গীর আলম বাড়িতে এসে দেখেন তার স্ত্রী বমি করছেন। এছাড়া বিষেরও গন্ধ বের হচ্ছিল। তাকে উদ্ধার করে দ্রুত নওগাঁ সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেকে) স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরদিন ভোরে মারা যান খাদিজা আকতার। তার পাঁচ বছরের একটি মেয়ে রয়েছে।
খাদিজার স্বামী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ময়নাতদন্ত শেষে খাদিজাকে দাফন করা হয়। দাফনের দুইদিন পর তার মোবাইল ফোনে ডা. হেলাল একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। পরে বাড়িওয়ালা শাহিন হোসেনের সঙ্গে মোবাইলে কথোপথনের ফোন রেকর্ড থেকে জানতে পারেন তার স্ত্রী ধর্ষণের শিকার হয়েছিল। এরপর থানা পুলিশকে জানানো হয়।
নওগাঁয় চিকিৎসকের কাছে ধর্ষণের শিকার হয়ে খাদিজা আকতার (৩০) নামে ওই নারী আত্মহত্যা করেন। ঘটনার দু’দিন পর মোবাইল ফোন রেকর্ড থেকে পাওয়া তথ্যের পর আত্মহত্যার রহস্য উন্মোচন হলে পুলিশ ধর্ষক ডা. হেলাল আহমেদ লিটনকে আটক করে।
ডা. হেলাল আহমেদ লিটন নড়াইল জেলার নড়াগাতী থানার কলাবাড়িয়া শিবপুর গ্রামে নজরুল ইসলাম সরদারের ছেলে।
স্থানীয় ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, পাঁচ বছর আগে শহরের পাটালীর মোড়ে শাহিন হোসেনের বাড়ির দুটি ঘর ভাড়া নিয়ে সেখানে পাইলস্ কিউর সেন্টার খোলেন ডা. হেলাল। তিন সপ্তাহ আগে ওই চেম্বারে শহরের হঠাৎ পাড়া মহল্লার রাজমিস্ত্রি জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী খাদিজা আকতার আয়া কাম চেম্বার সহকারী হিসেবে চাকরি নেন। গত ১৮ জানুয়ারি বিকেলে ৫টার দিকে ডা. হেলাল তার চেম্বারে খাদিজাকে একা পেয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। ঘটনার পর খাদিজা বাড়িতে যান। এরপর থেকে তিনি পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে তেমন কথা বলতেন না। সব সময় মন খারাপ করে থাকতেন।
নওগাঁ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হাই বলেন, খাদিজার বাবা অলিলুর রহমান বাদী হয়ে শুক্রবার মামলা করেছেন। মামলার প্রেক্ষিতে ওই দিনই পুলিশ ডা. হেলালকে চেম্বার থেকে আটক করে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে খাদিজাকে ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছেন ডা. হেলাল। ঘটনার আরো বিস্তারিত জানতে আদালতে আসামির তিন দিনের রিমান্ড আবেদন করা হবে বলেও জানান তিনি।