এবার নীলফামারীর ডিমলায় প্রেমের সম্পর্কের জেরে বিয়ের ২০ দিনের মাথায় সুধা রানী নামে এক স্কুলছাত্রীর গর্ভপাত ঘটানো হয়েছে। গর্ভপাতের পর চিকিৎসা না করিয়ে ওই ছাত্রীকে ঘরে আটক রেখে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ করেছে তার পরিবার। সোমবার সকালে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার ঝুনাগাছ চাপানি ইউনিয়নের উত্তর সোনাখুলি থেকে ওই স্কুলছাত্রীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছে পুলিশ।
স্থানীয় বরাতে জানা গেছে যে, শুধা রানী সোনাখুলি গ্রামের সুভাশ চন্দ্র রায়ের মেয়ে। চাপানি সোনাখুলি সৈকত নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালযের ৭ম শ্রেণির ছাত্রী শুধা রানীর সঙ্গে একই গ্রামের ননী চন্দ্র রায়ের ছেলে জয়কান্ত রায়ের (১৫) প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রেমের সূত্রে দৈহিক সম্পর্কের কারণে একসময় ওই ছাত্রী ৬ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে এলাকায় তোলপাড় শুরু হয় এবং গত ৮ জুলাই আদালতে এফিডেফিটের মাধ্যমে জয়কান্ত রায়ের সাথে শুধা রানীর বিয়ে হয়।
বিয়ের সময় রানীর বাবা সুভাশ চন্দ্র রায় তার বসতবাড়ির ১০ শতক জমি বিক্রি করে বরকে যৌতুক হিসাবে দেন। তবে বিয়ের ২০ দিনের মাথায় সুকৌশলে সুধা রানীকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন পার্শ্ববর্তী হাতিবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গর্ভপাত ঘটায়। পরে বাড়িতে এসে বিনা চিকিৎসায় আটকে রাখে।
বিষয়টি নিয়ে সুধা রানীর চাচা ধরঞ্জয় রায় বাদী হয়ে ডিমলা থানায় ছয়জনকে আসামী করে অভিযোগ দায়ের করেন। এ বিষয়েও সুধা রানী অভিযোগ করে বলে, তাকে বিয়ের পর থেকে তার শ্বশুর ধনঞ্জয় রায় (৫৫), শাশুড়ি মালতী রানী (৫২), স্বামী জয়কান্ত রায় (১৫), ভাসুর হিমান্ত (৩২), অনন্ত রায় (৩০), চাচা শ্বশুরের ছেলে গৌতম কুমার রায় (২৮) ও মহাদেব চন্দ্র রায় (২৫) সব সময় পাশবিক নির্যাতন করত।
সুধা রানী আরও অভিযোগ করে বলে, গত বুধবার তাকে হাতিবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গিয়ে জোরপূর্বক গর্ভপাত করান। বাড়িতে আসার পর তাকে চিকিৎসা ও ঠিকমতো খেতে দেয়নি শ্বশুড়বাড়ির লোকজন। প্রশাসনের নিকট গর্ভের সন্তান নষ্ট ও নির্যাতনকারীদের বিচার দাবি করেছে সুধা রানী।
ডিমলা থানা পুলিশের এসআই মোকছেদুল ইসলাম বলেন, ছাত্রীটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বর্তমানে ছাত্রীটির চিকিৎসা চলছে। ডিমলা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মফিজ উদ্দিন শেখ বলেন, অভিযোগ তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। আর অভিযোগ প্রমানিত হলে অভিযুক্তদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে।