ধামরাইয়ে এক মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলের ছুরিকাঘাতে মা খুন হয়েছেন। গুরুতর আহত হয়েছেন তার বাবা ও ভাই।
সোমবার সকালে ধামরাই উপজেলার আড়ালিয়া ইউনিয়নের খরারচড় গ্রামে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে।
নিহত মায়ের নাম জামেনা খাতুন (৫০)। স্থানীয় কৃষক আব্দুল বাছেরের স্ত্রী ছিলেন তিনি। চার সন্তানের জননী এই মায়ের ছোট সন্তান রায়হান (২৫) বেশ কয়েক বছর যাবৎ মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েছেন। তার শরীরে জ্বিনের উপস্থিতি রয়েছে বলে বিশ্বাস করতেন তার পরিবারের সদস্যরা!
ধামরাই থানার উপপরিদর্শক কামাল হোসেন জানান, মৃত জামেনা খাতুন একজন ঈমানদার নারী ছিলেন বলে জানিয়েছে এলাকাবাসী। সন্তানের মানসিক ভারসাম্য ফিরিয়ে আনার জন্য তিনি নিয়মিত সূরা-ক্বিরাত তেলায়াত করে সন্তানের মাথায় ফুঁ দিতেন। এই ঘটনায় বিরক্ত ও ক্ষিপ্ত হয়ে সোমবার সকালে ঘুমের মধ্যে মায়ের ওপর হামলা চালায় রায়হান। বাঁশ কাটার দা দিয়ে মায়ের গলায় উপর্যুপরি আঘাত করলে তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান। তার চিৎকারে বাবা ও ভাই এগিয়ে গেলে তাদেরও কোপায় রায়হান। এতে তারাও গুরুতর আহত হন। এর মধ্যে বাবা আব্দুল বাছেরকে ভর্তি করা হয়েছে সাভারের এনাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে।
রায়হানের প্রতিবেশীরা জানান, কয়েক বছর আগেও রায়হানের মানসিক ভারসাম্য ঠিক ছিল। তখন সে একটি হাফেজিয়া মাদরাসায় পড়তো। সেখানেই তার মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে যায়। মাদরাসায় থাকাকালীন রায়হানকে জ্বিনে কবজা করেছে বলে বিশ্বাস করতেন পরিবারের সদস্যরা। এজন্য রায়হানকে বিভিন্ন কবিরাজের কাছে নিয়ে ঝাড়-ফুঁ চিকিৎসা করানো হতো। কবিরাজের কথা অনুয়ায়ী সন্তানের ভারসাম্য ফিরিয়ে আনতে রায়হানের মা জামেনা খাতুন নিজেও সূরা-ক্বিরাত তেলাওয়াত করে নিয়মিত ঝাড়-ফুঁ দিতেন। এতেই রায়হান ক্ষিপ্ত হয়ে থাকতে পারে।
সালাম মোল্লাহ নামের রায়হানের এক প্রতিবেশী বলেন, ‘রায়হান সব সময় একা একটি ঘরে থাকতে বেশি পছন্দ করত। কারো সঙ্গে কথা বলতে চাইত না। আমার মনে হয় রায়হানের শরীরে থাকা অশরীরী জ্বিনকে তাড়ানোর চেষ্টা করায় ওই জ্বিন ক্ষিপ্ত হয়ে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে থাকতে পারে।’
ঘটনার পর মানসিক ভারসাম্যহীন রায়হানকে আটক করে থানায় নিয়ে গেছে পুলিশ।