ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার দোড়া ইউনিয়নের পাঁচলিয়া গ্রামে আনন্দ মেলার নামে অবাধে চলছে নারীদের নগ্ন নৃত্য, সার্কাস ও ম্যাজিক শোর আড়ালে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে অশ্লীলতাপূর্ণ ভ্যারাইটি শো। সেই সাথে বসছে জুয়ার আসর।
ম্যাজিক শোর প্যান্ডেলে ৫০-৭০ টাকা দিয়ে দেখা যাচ্ছে ভ্যারাইটির শোর অশ্লীল নাচ। সেই সঙ্গে অতিরিক্ত টাকা দিলে নৃত্যরত তরুণীর সংবেদনশীল স্থানে হাত দেওয়া যাচ্ছে। এতে বিপদগামী হচ্ছে উপজেলার ছাত্রসহ তরুণ যুব সমাজ।
প্রশাসন, এবং কিছু অসাধু সাংবাদিক ও ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী ব্যাক্তিদের প্রত্যক্ষ ইন্ধনে চলছে এসব অসামাজিক কার্যকলাপ। মেলার পাশে স্থানীয় প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুল থাকায় একদিকে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া যেমন বিঘ্নিত হচ্ছে অন্যদিকে সাধারণ জনগণের পকেট কেটে করা হচ্ছে নিঃস্ব।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিকাল হতেই উপজেলা ও এর আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মাইক্রো, প্রাইভেট, সিএনজি, আলমসাধু, অটোভ্যান ও মটরসাইকেলে করে মেলা স্থলে লোক আসতে থাকে। সন্ধা হতে সার্কাস ও ম্যাজিক শো শুরু হলেও রাত ১১টার পর শুরু হয় ভ্যারাইটি শো। তাতে বেসামালভাবে সুন্দরী নারীদের গাঁয়ের পোশাক অর্ধনগ্ন হয়ে চলে নগ্ন নৃত্য ও গান।
প্রশাসনের চোঁখ ফাঁকি দিয়ে এর পাশেই বসছে জুয়ার আসর। গভীর রাত পর্যন্ত শুধুই অশ্লীলতা ও বিকৃত যৌন আবেদনে ভরা উলঙ্গ নৃত্য এবং অরুচিকর গানের আগ্রাসন। উঠতি বয়সের স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী ও গ্রাম্য যুবকসহ দূর-দূরান্তের বিকৃত মানসিকতার মানুষের উপচেপড়া ভীড় ও তাদের আড্ডায় জমে উঠেছে মেলা প্রাঙ্গণ।
স্থানীয় সচেতন মহলের অভিযোগ, প্রশাসন মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে এইসব আনন্দ মেলার অনুমতি দিয়েছে। মেলা এলাকা বর্তমানে অপরাধীদের অভয়াশ্রমে পরিণত হয়েছে। মেলাকে কেন্দ্র করে চলছে অসামাজিক কার্যকলাপ। আবার লোক চক্ষুর আড়ালে চলছে গাঁজা ও ইয়াবা সেবন।
এলাকার অনেকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এ রকম গ্রাম্য পল্লী এলাকায় মেলার নামে অশ্লীলতা তরুণ ছেলে মেয়েরা খারাপের দিকে ধাবিত হচ্ছে। সেই সাথে এলাকার উঠতি বয়সের যুবকদের বিপদগামী করা হচ্ছে। তারা এ বিষয়ে প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
কোটচাঁদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিপ্লব কুমার সাহা প্রতিবেদককে জানান, আমার কাছে মেলায় জুয়ার আসর এবং নগ্ন নৃত্য হচ্ছে বলে কোন অভিযোগ আসেনি। এই প্রথম অভিযোগ শুনলাম, তারপরও বিষয়টি দেখা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ঝিনাইদহ অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক খোদেজা খাতুন জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিষয়টি দেখতে বলছি।