বন্ধুকে আটকে বান্ধবীকে পালাক্রমে ধর্ষণ করল বখাটেরা!


পাবনার পাকশী জোড়া সেতু এলাকায় বেড়াতে আসা দুই স্কুল ছাত্রীকে পুলিশ পরিচয়ে স্থানীয় ৫ বখাটে বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে পার্শ্ববর্তী আখ ক্ষেতে নিয়ে পালাক্রমে জোরপূর্বক ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে।

এ ঘটনায় ভিকটিম ওই দুই ছাত্রী পাকশী পুলিশ ফাঁড়িতে অভিযোগ দিলে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৩ বখাটেকে আটক করলেও পরে অদৃশ্য কারণে তাদের ছেড়ে দেয়।

তবে এ ঘটনায় কোন মামলা দায়ের করা হয়নি। আর পুলিশ বলছে ঘটনাটি ধর্ষণ নয়, ছিনতাই ঘটনা। শনিবার (২১ জুলাই) সকালে পাকশী জোড়া সেতু এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, শনিবার সকালে পাবনা থেকে দুই যুবক ও দুই স্কুল ছাত্রী একসঙ্গে জোড়া সেতু এলাকায় এসে নদীর ধারে আখ ক্ষেতের পাশে বসে গল্প করছিলো। ঠিক সেই সময় পাকশীর গুড়িপাড়ার উৎপল, মেরিন পাড়ার ফিরোজ, স্থানীয় নৌকা মিস্ত্রি প্রদীপ কুমার, রূপপুর প্রকল্পের লংলাইফ সিকিউরিটি কোম্পানীর গার্ড নিশান ও সাহাপুর পশ্চিমপাড়া গ্রামের মতি নিজেদের পুলিশ পরিচয় দিয়ে বেড়াতে আসা ওই দুই যুবককে বেধড়ক মারপিট করে আখ ক্ষেতের মধ্যে বেঁধে রেখে তাদের কাছে থাকা নগদ টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। পরে তারা ৫ জন ওই দুই স্কুল ছাত্রীকে আখ ক্ষেতের ভিতর নিয়ে গিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এক পর্যায়ে তাদের আত্মচিৎকারে স্থানীয় নৌকার মাঝি, দোকানি ও বেড়াতে আসা অন্য পর্যটকরা একত্রিত হয়ে সেখানে গিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় দুই স্কুল ছাত্রীসহ যুবকদ্বয়কে উদ্ধার করে। সে সময় ওই বখাটেরা পালিয়ে যায়।

পরবর্তীতে স্থানীয়দের সহযোগীতায় দুই যুবক ও স্কুল ছাত্রীরা পাকশী পুলিশ ফাঁড়িতে গিয়ে ঘটনার বর্ণনা দিয়ে অভিযোগ দায়ের করে পাবনায় ফিরে যায়। সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতে পাকশী পুলিশ ফাঁড়ির এস আই দেওয়ান আলমগীর হোসেন একদল পুলিশ নিয়ে সেখানে অভিযান চালিয়ে প্রদীপ, নিশান ও মতিকে আটক করে। অদৃশ্য কারণে আটকের কয়েক ঘণ্টা পর তিনজনের কাছ থেকেস মুচলেকা নিয়ে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়। লোকলজ্জার ভয়ে ওই দুই ছাত্রী গোপনে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে বিভিন্ন মাধ্যমে জানা গেছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় নৌকার মাঝি, দোকানি ও বেড়াতে আসা পর্যটকরা জানান, তারা দুই মেয়ের চিৎকার শুনে আখ খেতে গিয়ে তাদের উদ্ধার করা হয়। সে সময় দুই যুবককে আখ খেতের সাথে বেঁধে রাখতেও দেখা যায় বলেও জানান তারা। পরে তাদের সহযোগীতায় পাকশী পুলিশ ফাঁড়িতে তাদের পৌছে দেওয়া হয় বলেও জানা গেছে।

এ বিষয়ে পাকশী পুলিশ ফাঁড়ির এসআই দেওয়ান আলমগীর হোসেন জানান, ধর্ষণের কোন ঘটনা নয়। তারা (দুই যুবক ও ২ স্কুল ছাত্রী) পাকশীতে বেড়াতে এসেছিলো। স্থানীয় বখাটেরা তাদের কাছ থেকে টাকা পয়সা কেড়ে নিয়েছিলো। তাই তারা অভিযোগ দেওয়ায় অভিযুক্ত প্রদীপ, নিশান ও মতিকে আটক করা হয়। পরে তাদের সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়।

একই কথা জানান, পাকশী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ শহিদুল ইসলাম শহীদ। তিনি আরও জানান, ওই দুই যুবক ও ২ স্কুল ছাত্রীর দায়ের কৃত অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্ত উৎপল ও ফিরোজকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। অভিযোগ দায়ের কারী দুই স্কুল ছাত্রী ও দুই যুবকরে নাম পরিচয় জানতে চাইলেও তিনি তা জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

এ বিষয়ে ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আজিম উদ্দিন জানান, এ রকম কোন অভিযোগ আমি পাইনি। লিখিত অভিযোগ পেলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।