‘কোটা আন্দোলনে হামলায় বহির্বিশ্বে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে ’

বাংলাদেশে কোটা সংস্কারে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের উপর হামলা, গ্রেপ্তার ও রিমান্ডে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় বহির্বিশ্বে বাংলাদেশ সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রবাসী শিক্ষার্থীরা।

এসব দমন নিপীড়নের প্রতিবাদ জানিয়ে আজ শনিবার ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি ৬২ জন শিক্ষার্থী এক বিবৃতি পাঠিয়েছেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এসব দমন-পীড়নের ঘটনা দিয়ে আমরা বহির্বিশ্বে পরিচিত হতে চাই না। এসব ঘটনার কারণে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তথা বাংলাদেশ সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হচ্ছে যা খুবই দুঃখজনক।’

শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘পূর্বঘোষিত শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে দমন-পীড়নের ঘটনা খুবই উদ্বেগজনক। এসব ঘটনার কারণে বহির্বিশ্বে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তথা বাংলাদেশ সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হচ্ছে যা খুবই দুঃখজনক। ন্যায্যতা ও সমতাভিত্তিক বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য কোটা সংস্কার যৌক্তিক একটি দাবি। এ লক্ষ্যে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরেই শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় ৩০ জুন আন্দোলনকারীরা প্রেস কনফারেন্স করতে গেলে বিনা উস্কানিতে আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়কসহ আন্দোলনরত ছাত্র-ছাত্রীদের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থানে নির্মমভাবে মারধর ও নির্যাতন করা হয়। এমনকি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া থেকেও প্রতিহত করা হয়। এতে দমন-পীড়ন এবং নেতাদের জোরপূর্বক তুলে নেওয়ার মত গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। পরবর্তীতে চট্টগ্রাম ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাঙ্গনে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের উপর দুর্বৃত্তদের হামলার খবর বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে এসেছে। চলমান এসব ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনগুলোর কোনো কার্যকরী ইতিবাচক ভূমিকা আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়নি।’

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ‘আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অনেককে পুলিশ গ্রেপ্তার ও হয়রানি করছে। এমনকি নেতাদের রিমান্ডে নেওয়ার মত ঘটনাও ঘটছে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা এবং অভিভাবকেরা এই ঘটনার প্রতিবাদ করতে গিয়ে নিপীড়িত হয়েছেন। পূর্বঘোষিত শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে এ ধরনের ঘটনা খুবই উদ্বেগজনক। আমরা মনে করি, বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে প্রত্যেক শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকের জন্য নিরাপদ আশ্রয়। শিক্ষার পরিবেশ বজায় রাখার স্বার্থে ক্যাম্পাসে দুর্বৃত্তায়ন বন্ধ করা জরুরি। আমরা সরকারকে দ্রুত চলমান অবস্থার যৌক্তিক সমাধানের আহ্বান জানাই এবং একই সঙ্গে সকল আক্রান্ত শিক্ষার্থীর অবিলম্বে সুচিকিৎসা, গ্রেপ্তার হওয়া ছাত্রছাত্রীদের ছেড়ে দেওয়া এবং যারা এসব বর্বরোচিত হামলা করেছে তাদের উপযুক্ত শাস্তির জোর দাবি জানাচ্ছি।’