রাশেদের মায়ের কান্নায় কাঁদলেন সবাই

‘আমার বাবা প্রতিদিন ফোন করে জিজ্ঞেস করত, মা কেমন আছ? আজ কতদিন আমার বাবার মুখ থেকে এই মা ডাক শুনি না। আমার বুকটা ভেঙে যাচ্ছে। আমার বাবা তো শুধু একটা চাকরি চেয়েছিল। কেন তাকে আজ এতদিন ধরে রিমান্ডে রাখা হয়েছে? প্রধানমন্ত্রীকে বলব, আমার ছেলেকে আপনারা ফিরিয়ে দিন। স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে দিন’— কথাগুলো শেষ করতে পারছিলেন না কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতা রাশেদের মা সালেহা বেগম। কাঁদলেন তিনি, কাঁদলেন উপস্থিত সবাই। গতকাল রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে উদ্বিগ্ন নাগরিক সমাজ আয়োজিত ‘মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও ন্যায্য দাবি আদায়ে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের অধিকার : কোন পথে বাংলাদেশ’ শীর্ষক গোলটেবিল সংলাপে রাশেদের মায়ের কান্নায় ভারী হয়ে ওঠে পরিবেশ। রাশেদের মা সালেহা বেগম বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার একটাই আবেদন, আমার সন্তানকে আমি ভিক্ষা চাই। তারে পেলে আমি গ্রামে চলে যাব। আমার মণির (রাশেদ) আর চাকরির দরকার নাই। আমার মণিরে যেন রিমান্ড থেকে মুক্ত করে। আমার সন্তানকে বাঁচান’। রাশেদের মা জানান, এখনো পরের বাড়ি কাজ করে সংসার চলে তাদের। স্বামী রাজমিস্ত্রি, কিডনি রোগে অসুস্থ। ভেবেছিলাম, মণি চাকরি করে সংসার চালাবে। আমাদের আর কোনো দুঃখ থাকবে না। এখন আমার ছেলেকে কারাগারে মরতে হচ্ছে। রাশেদ খানের বিরুদ্ধে শিবিরের রাজনীতি করার অভিযোগ সম্পর্কে তিনি বলেন, তার ছেলে কোনো রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নয়। তার পরিবারও রাজনীতি করে না। সালেহা বেগম বলেন, আমার মণি সাধারণ ছাত্র। স্কুল, কলেজে ভালো রেজাল্ট করেছে। কত সুখ্যাতি তার। এত ভালো ছেলের নামে কেন এত বদনাম ছড়ানো হচ্ছে আজ? রাশেদের স্ত্রী রাবেয়া আলো বলেন, আন্দোলনে আসার পর তাকে শিবির বলে আখ্যায়িত করা হচ্ছে। কিন্তু আমার স্বামী কখনই রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নয়। তিন নেতাকে কারাগারে : সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত ‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের’ যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক হোসেনসহ তিনজনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছে আদালত। গতকাল তিন দিনের রিমান্ড শেষে তাদের ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হলে বিচারক সাদবীর ইয়াসির আরাফাত চৌধুরী এ আদেশ দেন।