হালদার ভাঙনে বিলীন সড়ক

কয়েক দফা বন্যা ও অতিবৃষ্টিতে বিলীন হতে চলছে ফটিকছড়ি উপজেলার নাজিরহাট-রামগড় সড়ক। নাজিরহাট কলেজ সংলগ্ন সড়কের প্রায় পুরো অংশ ইতোমধ্যে বিলীন হয়ে গেছে হালদা নদীতে। এখন স্থানীয়রা আশঙ্কা করছেন বাকি অংশটিও যে কোনো মুহূর্তে ভেঙে পড়ে উত্তর ফটিকছড়ির সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। যদি এমনটা ঘটে, তাহলে চরম দুর্ভোগে পড়বেন ফটিকছড়ির উত্তরাঞ্চলীয় কয়েক লাখ মানুষ।

সরেজমিনে দেখা যায়, নাজিরহাট কলেজের উত্তর পাশের নাজিরহাট-রামগড় সড়কটির পূর্ব পাশে হালদা নদী ও পশ্চিম পাশে মন্দাকিনি খাল প্রবাহিত হয়েছে। তার মধ্যখানে এ সড়ক হওয়ায় পূর্বাংশে হালদা নদীতে সড়কটির তিন-চতুর্থাংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। তবে পশ্চিমাংশে মন্দাকিনি খাল হওয়ায় সড়কটি সরিয়ে নেয়ার কোনো বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব হচ্ছে না।

বর্তমানে সড়কটি দিয়ে বড় ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা না নিলে যে কোনো সময় সড়কের বাকি অংশটুকু নদীতে বিলীন হয়ে যাবে। ভাঙনের ফলে নাজিরহাট পৌরসভা, সুয়াবিল, হারুয়ালছড়িসহ ভুজপুর থানার প্রায় কয়েক লাখ মানুষ চরম দুভোর্গে পড়বে।

এলাকাবাসীরা জানায়, গতবছর দফায় দফায় বন্যা ও পাহাড়ি ঢলে সড়কটি ভাঙনের কবলে পড়ে ছিল। কিন্তু এলজিইডি ও পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনী ব্যবস্থা না নেয়ার ফলে এক বছর পরে ঠিক একই স্থানে সড়কটি ভাঙ্গনের কবলে পড়ে।

মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল হোসেন জুনু বলেন, ‘গত দুই বছর আগে তৎকালীন পানিসম্পদ মন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বর্তমান ভাঙন এলাকা পরির্দশন করেন। সে সময় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেয়া হলেও কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় আজ এই দুভোর্গ সৃস্টি হয়েছে। তারা যদি শুস্ক মৌসুমে নদীর ভাঙন রক্ষায় ব্যবস্থা নিত, তাহলে আজ এই অবস্থা হতো না।’

এলাকাবাসী আরও জানান, ভাঙন ঠেকাতে পানি উন্নয়ন বোর্ড কিছু বালির বস্তা দিলেও কাজের কাজ কিছু হয়নি। উক্ত ভাঙন রোধ কল্পে হালদা নদীর মধ্যখানে পানি প্রবাহ এলাকায় জেগে উঠা চরে ড্রেজিং, পানির প্রবাহ পরিবর্তনে ঝঁটি নির্মাণ এবং ভাঙন কবলিত সড়কের পশ্চিম পাশে মন্দাকিনী খালের পানির গতি পরিবর্তন করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি দিলেও গেল এক বছরেও কোনো কাজ হয়নি। তাই জরুরি ভিত্তিতে ভাঙন রোধ করা না গেলে, যে কোনো মুহূর্তে সড়কটি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের চট্টগ্রাম বিভাগীয় প্রকৌশলী সামশুদ্দিন করিম জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে একজন ঠিকাদার নিয়োগ করেছি। নাজিরহাট কলেজের পাশের ভাঙন রক্ষায় পাঁচশত জিও ব্যাগের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ঠিকাদার কাজ করছে।’