বছরের পর বছর দেশের আবহাওয়া পরিবর্তনের ছাপ পড়তে শুরু করেছে ঝিনাইদহের পাট চাষিদের ওপর। এতে করে জেলায় পাট চাষ কমছে প্রত্যেক মৌসুমে। বাজারে দাম পড়ে যাওয়াকেও এর জন্য দায়ী করছেন চাষিরা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর থেকে জানা যায়, গত বছর ঝিনাইদহের ৬টি উপজেলা হরিণাকুন্ড, মহেশপুর, কোঁটচাদপুর, কালীগঞ্জ, শৈলকূপা ও সদর উপজেলায় ১৫ হাজার ৪৬৫ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছিল। কিন্তু এ বছর তা কমে হয়েছে ১৫ হাজার ৪৪৫ হেক্টর।
সদর উপজেলার খাজুরা গ্রামের কৃষক বেলাল মোল্ল্যা জানান, এ বছর পানি জমে অনেক স্থানে পাট গাছ মরে গেছে। এছাড়া বৈরি আবহাওয়ার কারণে বপনকৃত পাটের ক্ষতি হয়েছে।
সদর উপজেলার চুটলিয়া গ্রামের পাটচাষি মানিক বিশ্বাস জানান, খেত থেকে পাট কাটা, বহন করে এনে বিল, খাল ও পুকুরে জাগ দিতে অনেক টাকা ব্যয় হয়। সেই হিসাবে দাম পাওয়া যায় না। পাটের দাম দিনের পর দিন কমতেই আছে।
ঝিনাইদহের শৈলকূপা উপজেলার পার্বতীপুর গ্রামের চাষি নাজির উদ্দিন জানান, এক বিঘা পাট চাষ করতে খরচ হয় ১২-১৫ হাজার টাকা। বিঘাতে পাট হয় ০৮/১২ মণ। প্রতি মণ পাট বিক্রি হয় ৮শ টাকা থেকে ১৪শ টাকা পর্যন্ত। এবার ১৬ কাঠায় চাষ করেছেন যা গত বছর ছিল ২৫ কাঠা।
চাষি এনামুল হক জানান, এ বছর শিলাবৃষ্টিতে পাটের ডগা ভেঙে গেছে। গাছের বাড়তি থেমে গেছে। কয়েক দিন অপেক্ষা করবেন। গাছ না বাড়লে খেত মেরে দিবেন। পাট পচানোর স্থান না পাওয়াও একটা কারণ বলে তিনি জানান।
ঝিনাইদহ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক জিএম আব্দুর রউফ জানান, গত দু-তিন বছর ধরে পাট চাষ করে চাষির উৎপাদন খরচ উঠছে না। ফলে চলতি মৌসুমে পাটের আবাদ কমিয়ে অন্য ফসলের দিকে ঝুঁকছেন চাষিরা।
তিনি আরও জানান, হঠাৎ শিলাবৃষ্টি, বেশি ঝড়-তুফান ও বৈরি আবহাওয়ার কারণে পাটের বেশ ক্ষতি হয়েছে এ বছর।