বাস রেলস্টেশনে উপচে পড়া ভিড়

প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে ঢাকা ছাড়ছে ঘরমুখো মানুষ। ঈদ যত ঘনিয়ে আসবে এই জনস্রোত ততই বাড়তে থাকবে। ফলে ধীরে ধীরে ফাঁকা হচ্ছে ঢাকা। রাজধানী ঢাকার যান্ত্রিক জীবন থেকে মুক্তি নিয়ে এতটুকু সুখ ও শান্তি খুঁজতে প্রিয়জনদের  সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগ করে নিতে এই যাত্রা। রেলের শিডিউল বিপর্যয়সহ নানা বিড়ম্বনার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে এবারের ঈদযাত্রা। একইসঙ্গে নগরীর বাস টার্মিনালগুলোয় ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। বিকালে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায় তিল ধারণের ঠাঁই নেই।

রেলপথ : গতকাল নির্ধারিত সময়ে স্টেশন ছেড়ে যেতে পারেনি ১১টি ট্রেন। এসব ট্রেন ১০ থেকে ২০ মিনিট দেরিতে ছেড়েছে। আন্তনগর মহানগর প্রভাতি এক্সপ্রেস ১২ মিনিট দেরিতে ছাড়ে। ২০ মিনিট বিলম্বে সিল্কসিটি এক্সপ্রেস কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ছেড়ে যায়। অগ্নিবীণা, চিত্রা এ রকম নামগুলো যাত্রীদের সঙ্গে রসিকতা করতেই বোধহয় জ্বলজ্বল করছে ট্রেনগুলোর গায়ে। গাছাড়া ভাব চলছে রেলেল। শিডিউল বিপর্যয়ের কারণে নির্ধারিত সময়ে কমলাপুর ও বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছে যাত্রীদের দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়েছে। যারা ১৫-১৬ ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে অগ্রিম টিকিট কেটেছিলেন তাদের ভাষ্য, এত দুর্ভোগ ভালো লাগে না। গতকাল কমলাপুর স্টেশনে আসা যাত্রীদের বেশির ভাগকেই বিভিন্ন ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। রেলসূত্র জানায়, এবারও ঈদে শিডিউল ঠিক রেখে ট্রেন চালানোর চেষ্টা চলছে। যাত্রীদের নিরাপত্তার দিক বিবেচনা করেই অনেক ট্রেন ধীরগতিতে চালানো ও বিরতিতে অতিরিক্ত সময় দিতে হচ্ছে। এদিকে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ম্যনেজার জানান, যেসব ট্রেন বিলম্বে কমলাপুর স্টেশনে আসছে সেসব ট্রেন বিলম্বেই ছাড়তে হচ্ছে। আমরা শিডিউল ঠিক রাখার চেষ্টা করছি। রেলওয়েসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ভাষ্য, বর্তমানে যেসব ইঞ্জিন চলছে তার প্রায় ৮৫ শতাংই মেয়াদোত্তীর্ণ। ফলে ৬০-৬৫ মাইল গতির পরিবর্তে ৩০-৩৫ মাইল গতিতে চালাতে হচ্ছে অধিকাংশ ট্রেন।

বাস টার্মিনালের যাত্রীতে ঠাসাঠাসি : গতকাল রাজধানীর প্রতিটি বাস টার্মিনাল ভোর থেকে ছিল যাত্রীতে ঠাসাঠাসি। একটার পর একটা যাত্রীবোঝাই বাস ছাড়তে দেখা যায় গাবতলী, সায়েদাবাদ ও মহাখালী আন্তজেলা বাস টার্মিনাল থেকে। বিকালে গাবতলী বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা গেছে, রবিবারের চেয়ে গতকাল যাত্রীর চাপ ছিল অনেক। বেশির ভাগ বাস পূর্বনির্ধারিত সময়ে ছেড়ে গেছে। টার্মিনালে অপেক্ষমাণ যাত্রীদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, ঈদের বেশ কয়েক দিন আগেই তারা বাড়ি যাচ্ছেন শুধু ভয়াবহ ভিড় আর যানজট থেকে রক্ষা পেতে। ঢাকা বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মো. সালাউদ্দিন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ঈদে যানজট স্বাভাবিক ঘটনা। তার পরও চলাচল স্বাভাবিক রাখতে যতটা সম্ভব চেষ্টা করা হচ্ছে। একই সমিতির ট্রেজারার কামাল হোসেন জানান, এবারের ঈদে সড়কপথে ১২-১৩ লাখ মানুষ ঢাকা ছাড়বে। তাদের যাত্রা দুই দিন আগে শুরু হয়েছে। আজ ও কালকের মধ্যে ঢাকা ছাড়বে ৪০ ভাগ মানুষ। আর আগামী বৃহস্পতি ও শুক্রবারের মধ্যে ঢাকা ছাড়বে বাকি ৫০ ভাগ মানুষ। ফলে দু-এক দিনের মধ্যেই যাত্রীর চাপ বাড়বে বলে আশঙ্কা তার।

  • ব্রেকিংবিডিনিউজ২৪ / ১২ জুন ২০১৮ / তানজিল আহমেদ