মেধাবী ছাত্র ছিলেন বাবুল হোসেন। এসএসসি পরীক্ষা দেয়ার পর একই এলাকার এক মেয়েকে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন। রাজি না হওয়ায় তার মানসিক পরিবর্তন দেখা দেয়। যাকে তাকে মারপিট, অন্যের জমির ফসল নষ্ট করাসহ নানা কারণে তাকে শিকলে বেঁধে রাখা হয়। সেই থেকে ২০টি বছর শিকলবন্দি জীবনযাপন করছেন তিনি। এরআগে তাকে পাবনা মানসিক হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়। কিন্তু সুস্থ হয়নি।
বাবুল হোসেন পাবনার চাটমোহর উপজেলার মূলগ্রাম ইউনিয়নের বেজপাড়া গ্রামের নূরুল সরকার ও আনোয়ারা বেগমের ছেলে। বাবুলকে নিয়ে চিন্তার শেষ নেই বৃদ্ধ বাবা-মায়ের। তার চিকিৎসার ব্যাপারে কোনো ভ্রুক্ষেপও নেই দুই ভাইয়ের। শিকলবন্দি বাবুলের এখন সম্বল সরকারি দুটি কম্বল।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেল, একটি ভাঙাচোরা টিনের ঘরে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে বাবুলকে। বাড়িতে লোকজন এলেই সবার দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে চেয়ে থাকে সে। ছোট ভাই গাজিউর সরকারের মুরগির খামারের পাশে উৎকট গন্ধের মধ্যে তাকে বেঁধে রাখা হয়েছে। বিষয়টি অমানবিক হলেও পরিবারের কাছে এগুলোই স্বাভাবিক!
অথচ আজ থেকে ২০ বছর আগে তিনি ছিলেন একজন সুস্থ স্বাভাবিক মানুষ। উপজেলার পার্শ্বডাঙ্গা ইউনিয়নের মহেলা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছিলেন।
বাবুলের মা আনোয়ারা বেগম বলেন, ‘আমার ছেলে (বাবুল) এক সময় পাঁচওয়াক্ত নামাজ পড়তো। পড়াশোনাতেও ভালো ছিল। কিন্তু হটাৎ ছেলের পাগল হয়ে যাওয়া মেনে নিতে কষ্ট হয়। ওর পাশে কেউ আসতে চায় না। আমাকেই সবকিছু করতে হয়। আমারও তো বয়স হয়েছে। আমি মরে গেলে ওকে কে দেখবে?’
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সরকার অসীম কুমার বলেন, বাবুল নামের ওই মানসিক প্রতিবন্ধীর ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে তার সুস্থ্যতা ও স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার সবরকম ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।