ফরিদপুরের জেলায় চরভদ্রাসন উপজেলার সাবেক জামায়াতে ইসলামীর কোষাধ্যক্ষ হাজী শওকত হোসেন রাতে তারাবির নামাজের অজুহাতে বাড়ি থেকে বের হয়ে মোটরসাইকেল যোগে এক বিধবা নারীকে সঙ্গে নিয়ে পার্শ্ববর্তী গ্রামে গিয়ে অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত হওয়ার সময় এলাকাবাসীর হাতে নাতে ধরা পড়েছেন ।
শুক্রবার (০১ জুন) বিকেলে এ ঘটনার পর ওই জামায়াত নেতার তিনটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তালা মেরে দেয়া হয়েছে।
জানা যায়, সদর ইউনিয়নের বিএস ডাঙ্গী গ্রামের মৃত শেখ বছির উদ্দিনের ছেলে জামায়াত নেতা হাজী শওকত হোসেন বৃহস্পতিবার রাতে তারাবির নামাজের অজুহাতে বাড়ি থেকে বের হয়। পরে মোটরসাইকেল যোগে এক বিধবা নারীকে সঙ্গে নিয়ে পার্শ্ববর্তী লোহারটেক গ্রামের জয়নাল সর্দারের বাড়িতে যান। ওই বাড়ির একটি ঘরে তারা অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত হয়। এ সময় পাশের বাড়ির এক নারী বিষয়টি দেখতে পেয়ে জামায়াত নেতা শওকত হোসেনের স্ত্রীকে মুঠোফোনে তার স্বামীর অপকর্মের কথা জানায়।
খবর পেয়ে ওই রাতেই জামায়াত নেতার স্ত্রী রূপসানা আক্তার ওতার কলেজ পড়ুয়া মেয়ে ফাতেমা বেগম ওই বাড়িতে উপস্থিত হন। তারা উপস্থিত হওয়ার পরই জামায়াত নেতা দৌঁড়ে পালিয়ে যান। ঘটনার পরদিন শুক্রবার দুপুরে জামায়াত নেতার স্ত্রী রূপসানা আক্তার তার স্বামীর বিভিন্ন কুকীর্তি ও একাধিক অবৈধ পরকীয়া সম্পর্কের ঘটনা উল্লেখ করে উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।
পরে চরভদ্রাসন ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম পুলিশরা দিনভর বিভিন্ন এলাকা তল্লাশি করেও জামায়াত নেতাকে খুঁজে পায়নি। পরে শুক্রবার বিকেলে উপজেলা সদর বাজারের বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন হাসান ট্রেডার্স নামক
জামায়াত নেতার রড, সিমেন্ট ও ঢেউটিনসহ তিনটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে তালা মেরে দোকান বন্ধ করে দেন সদর ইউপি চেয়ারম্যান মো. আজাদ খান।
জামায়াত নেতার বড় ভাই শেখ আবুল কালাম জানান, ছোট ভাই শওকত হাজীর একই রকম পরকীয়া সম্পর্কের বহু ঘটনা আমাদের সামাল দিতে হয়েছে। তার একের পর এক অপকর্মে পুরো পরিবারসহ আমরা সবাই অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছি। শওকত হাজীর সংসারে তিনটি মেয়ে ও একটি ছেলে রয়েছে। তার সমস্ত স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তিগুলো তার সন্তানদের নামে দিয়ে দিতে পারলে আমরা মুরুব্বিরা দায়িত্ব থেকে মুক্তি পেতাম।
জামায়াত নেতা শওকত হোসেনের স্ত্রী রূপসানা আক্তার বলেন, ঘটনার রাতে ফোন পেয়ে মা মেয়ে দু’জনে ছুটে যাই। লোহারটেক গ্রামের জয়নালের বাড়ির ঘরে শওকত ও ওই নারীকে অশ্লীল অবস্থায় দেখে আমি চিৎকার দিলে শওকত দৌঁড়ে পালিয়ে যায়।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, শওকত ওই বাড়ির মালিক জয়নাল সর্দারকে মাসিক টাকা দিয়ে এই অপকর্ম চালিয়ে আসছিল।
চরভদ্রাসন সদর ইউপি চেয়ারম্যান মো. আজাদ খান জানান, জামায়াত নেতা শওকত হোসেনের স্ত্রী রূপসানা আক্তার ও তার মেয়েসহ এলাকার কিছু লোক আমার কাছে এসে শওকতের বিভিন্ন অপকর্মের বিচার দাবি করে। গ্রাম পুলিশ দিয়ে শওকতকে আটক করতে পাঠানো হলেও তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। পরে তার তিন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে তালা মেরে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে, যাতে করে সে আমার কাছে আসে। চরভদ্রাসন থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাম প্রসাদ ভক্ত জানান, অভিযোগ এ ব্যাপারে পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।