আগামী সপ্তাহে মাঝারি বন্যার আশঙ্কা

গত বছরের মতো এবার হঠাৎ আগেভাগে বন্যা হয়নি। বরাবরের মতো জুনের মাঝামাঝি সময়ে দেশের পূর্বাঞ্চলে পাহাড়ি ঢল ও টানা বর্ষণে বন্যা হয়েছে। পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও এক সপ্তাহ ধরে মৌলভীবাজার ও সিলেটের বিভিন্ন স্থানে বন্যার পানি আছে। এ অবস্থায় আগামী সপ্তাহে উত্তরাঞ্চলে বন্যার আশঙ্কা করছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। সংস্থাটির ধারণা, এই বন্যা হবে মাঝারি।

পূর্বাভাস কেন্দ্রের হিসাবে, আগামী সপ্তাহের মাঝামাঝি সময়ে দেশের মধ্য ও উত্তরাঞ্চলের বেশ কয়েকটি জেলায় বন্যার পানি ঢুকতে পারে। বন্যার পানি প্রথমে ঢুকতে পারে বগুড়া, সিরাজগঞ্জ ও জামালপুর জেলার নিম্নাঞ্চলে। এরপর পর্যায়ক্রমে উত্তর ও মধ্যাঞ্চলের ২০ থেকে ২৫টি জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে। তবে এই বন্যার স্থায়িত্বকাল এলাকাভেদে তিন থেকে সাত দিন পর্যন্ত হতে পারে।

এ ব্যাপারে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া গতকাল বুধবার প্রথম আলোকে বলেন, এক সপ্তাহ ধরে উত্তর-পূর্বাঞ্চলে যে বন্যা চলছে, তার উন্নতি বা পানি কমে আসতে পারে। তবে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে উত্তরাঞ্চলের নদীগুলো উপচে পানি পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোর নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে। এই বন্যার স্থায়িত্বকাল সর্বোচ্চ এক সপ্তাহ হতে পারে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এরপর আগামী দুই মাসের মধ্যে মাঝারি থেকে তীব্র একটি বন্যার আশঙ্কা আছে।

পূর্বাভাস কেন্দ্রের আজ বৃহস্পতিবার ও আগামীকাল শুক্রবারের জন্য দেওয়া পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা ও পদ্মা নদীর পানি বাড়তে পারে। সুরমা ছাড়া উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বেশির ভাগ নদ-নদীর পানি কমছে। দেশের বিভিন্ন নদ-নদীর মধ্যে ৪২টি পয়েন্টে পানি কমছে, আর ৪৬টিতে পানি বাড়ছে। সাতটি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বইছে।

মৌলভীবাজারের বেশির ভাগ এলাকা থেকে বন্যার পানি নেমে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে ওই জেলায় বন্যায় ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে গত দুই দিনে কোনো মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি। বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর মৌলভীবাজারের পাঁচটি উপজেলার বিভিন্ন স্থানের বাড়ি-ঘর ও রাস্তাঘাট ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার খবর আসছে। বিশেষ করে মৌলভীবাজার পৌরসভার সড়ক-মহাসড়কগুলো বন্যায় মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনেক সড়ক যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আজকের জন্য দেওয়া আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আজ ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ স্থানে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত হতে পারে। দেশের অন্যত্র কিছু স্থানে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা আছে।