ক্রমবর্ধমান পুষ্টি চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি বেকারদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে সিরাজগঞ্জে ব্যক্তিগত উদ্যোগে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে তালুকদার ডেইরি ফার্ম। উন্নতজাতের ষাঁড় ও গাভি পালনে এ ফার্মটি এলাকায় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
এ ডেইরি ফার্মের শ্রমিক-কর্মচারি ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দেড় বছর আগে প্রতিষ্ঠিত এ ফার্মটির পরিধি ধীরে ধীরে বেড়েই চলেছে। এ ফার্মের মাধ্যমে এলাকার বেকার যুবকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। ফার্মটিতে বর্তমানে ৩২টি উন্নতজাতের ষাঁড়, ৭০টি গাভি ও ৩৮টি বাছুর রয়েছে। বিশাল আকৃতির ষাঁড়গুলোর প্রতিটির গড় মূল্য প্রায় দেড় লাখ টাকা। ৭০টি গাভি থেকে প্রতিদিন গড়ে ৭-৮ মণ দুধ উৎপাদন হচ্ছে।
ফার্মে কর্মরত মো. সেলিমসহ কয়েকজন কর্মচারি বলেন, আমাদের বাড়ির পাশে এমন একটি ফার্ম তৈরি করায় আমরা কাজ পেয়েছি। একইসঙ্গে আমাদের অভাবও দূর হচ্ছে।
এ প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার হিমেল তালুকদার বলেন, আমরা বিভিন্ন উন্নতজাতের ষাঁড় ও গাভি পালন করছি। এর মধ্যে রয়েছে ব্রাহমা, ফ্রিজিয়ান, সিন্ধি, জার্সি ও দেশি। দেড় বছর আগে ফার্মটি তৈরি করা হয়েছে। বর্তমানে ফার্মে সব মিলিয়ে ১৪০টি গরু রয়েছে।
এছাড়া ভেড়া পালনও শুরু করেছি। এসব গবাদি পশুর খাদ্যের জন্য প্রায় ৪০ বিঘা জমিতে উন্নতজাতের ঘাস উৎপাদন করা হচ্ছে। গবাদি পশুর গোবর থেকে বায়োগ্যাস তৈরি করে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। কয়েকদিনের মধ্যেই এ গ্রামের ১০০টি পরিবারের মধ্যে গ্যাস দেয়া সম্ভব হবে। তবে প্রথম দিকে ফার্মটিতে আয়ের মুখ দেখা না গেলেও ধীরে ধীরে ভালো আয় আসবে বলে তিনি জানান।
ডেইরি ফার্মের মালিক বোরহান উদ্দিন তালুকদার বলেন, দেশের ক্রমবর্ধমান পুষ্টি চাহিদা মেটানোই শুধু নয়, নির্ভেজাল দুধ এবং মাংস উৎপাদনের লক্ষ্য নিয়েই এ ফার্মটি যাত্রা শুরু করেছে। আগামী ২-৩ বছরের মধ্যে এক হাজার গরুর ফার্মে পরিণত করা হবে। শত শত বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা হবে। পাশাপাশি বিপুল পরিমাণ দুধ ও মাংস উৎপাদন করে দেশের পুষ্টি চাহিদা মেটাতে ভূমিকা রাখবে ডেইরি ফার্মটি।
এছাড়াও হরিণ পালনের জন্য আরও একটি শেড করা হয়েছে। ইতোমধ্যে বন বিভাগ থেকে অনুমোদন নেয়া হয়েছে। আগামী মাসে ৪টি হরিণ দিয়ে এর যাত্রা শুরু হবে।
জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা মো. আক্তারুজ্জামান ভুইয়া বলেন, পরিশুদ্ধ ও ভেজালমুক্ত দুধ ও মাংস উৎপাদনে ভূমিকা রাখছে ফার্মটি। এই প্রথম আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে উন্নতজাতের ষাঁড় উৎপাদন করা হচ্ছে এখানে। জেলা প্রাণীসম্পদ বিভাগ এ বিষয়ে সার্বিক পরামর্শ ও সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করতে বিত্তবানদের এ রকম ফার্ম তৈরি করা উচিত বলে মনে করেন তিনি।