কুমিল্লা শহরের নানুয়া দীঘির উত্তর পাড়ে দর্পণ সংঘের উদ্যোগে আয়োজিত অস্থায়ী পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন রাখার দায়ে প্রধান অভিযুক্ত ইকবাল হোসেন ভবঘুরে কিংবা পাগল নয় বলে জানিয়েছে কুমিল্লার বিশেষ পুলিশ সুপার (সিআইডি) মোহাম্মদ রেজওয়ান। তিনি বলেন, ‘ইকবাল ঘটনার পরে পালিয়ে গেছে কক্সবাজারে। একজন পাগলের পক্ষে ট্রেনে উঠে চট্টগ্রাম, সেখান থেকে কক্সবাজার যাওয়া সম্ভব নয়।’
ইকবালকে অত্যন্ত বিচক্ষণ দাবি করে তিনি আরও বলেন, তাকে ভবঘুরে বলার সুযোগ নেই। ইকবালের ন্যাশনাল আইডি কার্ড আছে। এ ছাড়া মটর শ্রমিক হিসেবে পেশায় নিয়োজিত ছিল। অন্যদিকে মসজিদের খেদমতে কাজ করত ইকবাল। সুস্থ মস্তিষ্কের একজন বিচক্ষণ মানুষ ইকবাল।
এদিকে কুমিল্লায় সাম্প্রদায়িক সহিংসতা উস্কে দেওয়ার অভিযোগে নতুন মামলা হয়েছে। যেখানে একটি নিউজ পোর্টাল পরিচালনাকারী সাজ্জাদ হোসেন শিমুল ও তার ভাই ফয়সাল মবিন পলাশকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সোমবার (১ নভেম্বর) কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানায় নতুন করে এ মামলাটি দায়ের করেন সিআইডির পরিদর্শক আতিকুর রহমান। এদিকে মণ্ডপে পবিত্র কোরআন রেখে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করার মামলার প্রধান আসামি ইকবাল হোসেন পাগল নয় এবং সে ভবঘুরেও নয় বলে জানিয়েছেন মোহাম্মদ রেজওয়ান।
পুলিশ সুপার আরও জানান, ঘটনার দিন নানুয়া দীঘির পাড়ের ঘটনাস্থলে এসে ‘কুমিল্লা টাইমস’ নামের একটি নিউজ পোর্টালে লাইভ প্রচার করে সহিংসতা উস্কে দেয়। এতে ওই নিউজ পোর্টালের সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন শিমুল ও নির্বাহী সম্পাদক ফয়সাল মবিন পলাশের বিরুদ্ধে সোমবার কোতোয়ালি মডেল থানায় ডিজিটাল সিকিউরিটি এ্যাক্টে মামলা দায়েরের পর তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। তারা জেলার মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানার বাঙ্গরা গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে। খান মোহাম্মদ রেজওয়ান জানান, রিমান্ডে থাকা আসামি ইকবাল হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে গুরুত্বপূর্ণ অনেক তথ্য পাওয়া গেছে। তবে রিমান্ডে থাকা মামলার প্রধান আসামি ইকবাল হোসেন পাগল ও ভবঘুরে বলা হলেও আসলে সে পাগলও নয় ভবঘুরেও নয়।
গত ১৩ অক্টোবর কুমিল্লা নগরীর নানুয়া দীঘির পাড়ে পবিত্র কোরআন অবমাননা ও পরবর্তীতে মন্দির ভাংচুরসহ বিভিন্ন ঘটনায় জেলায় সোমবার পর্যন্ত মোট ১২টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে কোতোয়ালি মডেল থানায় ৮টি, সদর দক্ষিণ মডেল থানায় ২টি এবং দাউদকান্দি মডেল থানায় ১টি ও দেবীদ্বারে একটি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে কোতোয়ালি মডেল থানায় পবিত্র কোরআন অবমাননা ও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের ঘটনার মূল হোতা ইকবাল হোসেনসহ চার আসামি গত ২৯ অক্টোবর থেকে দ্বিতীয় দফায় ৫ দিনের রিমান্ডে রয়েছেন।