প্রতিবেশী দেশ ভারতে করোনা আক্রান্ত রোগীর চাপে হাসপাতালগুলোর চিকিৎসাসেবা ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে। বিভিন্ন হাসপাতালে দেখা দিয়েছে অক্সিজেন সঙ্কট। ইতোমধ্যে বাংলাদেশে অক্সিজেন রফতানি বন্ধ করে দিয়েছে ভারত।এর মধ্যে বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে ভারতে অক্সিজেন সঙ্কটে রোগীর মৃত্যু, রোগীদের অসহায়ত্ব- এসব প্রতিবেদন দেখে উদ্বিগ্ন ও আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন দেশের সাধারণ মানুষ।
এ অবস্থায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক অক্সিজেন নিয়ে আশ্বস্ত করেছেন। তিনি বলেন, অক্সিজেন নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই। দেশে করোনার সংক্রমণ যখন পিকে উঠেছিল তখন ভারত থেকে প্রতিদিন ৪০-৫০ টন অক্সিজেন আমদানি করেছি। গত চারদিন অক্সিজেন আমদানি বন্ধ থাকলেও সঙ্কট হচ্ছে না।
বাংলাদেশে কি পরিমাণ অক্সিজেন প্রতিদিন উৎপাদন হয়, সরকারি-বেসরকারি শিল্পপ্রতিষ্ঠান ও হাসপাতালগুলোতে এর চাহিদা কতো, বর্তমানে অক্সিজেনের মজুত কতটুকু রয়েছে-এসব বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে দেশে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে প্রতিদিন ১৫০ টন লিকুইড অক্সিজেন উৎপাদন হচ্ছে। এছাড়া শিল্পপ্রতিষ্ঠান ও হাসপাতালের জন্য প্রতিদিন ২৫০ থেকে ৩০০ টন গ্যাস অক্সিজেন উৎপাদনসহ মোট ৪০০ টন অক্সিজেন দেশেই হয়। পৃথকভাবে (কতটুকু লিকুইড ও কতটুকু গ্যাস অক্সিজেন) বলা সম্ভব না হলেও বর্তমানে করোনা চিকিৎসায় প্রতিদিন ১২৫ থেকে ১৫০ টন অক্সিজেন প্রয়োজন হয়।
তিনি বলেন, হাসপাতালে শুধু লিকুইড অক্সিজেন দিয়েই কাজ চলে না। সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন তো মাত্র কয়েক দিন আগে হলো। এর আগেও কিন্তু হাসপাতালে কিছুসংখ্যক লিকুইড আর বাকিগুলো গ্যাস অক্সিজেন ব্যবহার হতো। বাংলাদেশে গ্যাস অক্সিজেনের অভাব নেই।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, দেশে যারা লিকুইড অক্সিজেন তৈরি করে তাদের কাছ থেকে সব অক্সিজেন নিয়ে হাসপাতালগুলোতে সরবরাহের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। অনেক বেসরকারি শিল্পপ্রতিষ্ঠানও ৪০ টন অক্সিজেন নেয়। তাদের সেই অক্সিজেনও আমরা রিজার্ভ করে ফেলেছি। আমরা আমদানিই করতাম ৪০ থেকে ৫০ টন।রোগী যদি অতিরিক্ত হয় তাহলে দেশে অক্সিজেন সঙ্কট দেখা দিতে পারে বলে সতর্ক করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, কমপক্ষে অর্ধশতাধিক হাসপাতালে গ্যাস সিলিন্ডারে চিকিৎসা প্রদানের সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। লিকুইড অক্সিজেন ব্যবহারের বদলে তাদের গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার করতে বলেছি। এছাড়া ছোট ছোট অক্সিজেন প্ল্যান্টও আমদানির উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে। সব দেশের চাহিদা রয়েছে তবুও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। অক্সিজেন প্ল্যান্ট বিভিন্ন হাসপাতালে স্ট্যান্ডবাই রাখা হবে। সব হিসাব-নিকাশ করে দেখা গেছে, অক্সিজেন নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। কিন্তু রোগী যদি সাত হাজারের স্থলে দু-তিন গুণ বেশি হয় তাহলে সঙ্কট দেখা দেবে, যা ইউরোপ-আমেরিকা ও বর্তমানে ভারতে হচ্ছে। তাই রোগীর সংখ্যা কমাতে হবে।