করোনাভাইরাসে নাজুক ভারতে সংক্রমণ ও মৃতের সংখ্যা রেকর্ডের পর রেকর্ড ভাঙছে। অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দিয়েছে দেশটির হাসপাতালে হাসপাতালে। মৃতের সংখ্যা এতই বেড়েছে যে, শ্মশানেও জায়গা হচ্ছে না।
এই যখন অবস্থা, তখন কলকাতায় দাম বাড়ছে সবধরনের চিকিৎসা উপকরণের। ১০ দিন আগেও যে পালস অক্সিমিটার ১ হাজার ৭০০ রুপি ছিল, এখন তার দাম চাওয়া হচ্ছে সাড়ে চার হাজার রুপি। সামান্য ভেপার নেওয়ার ৩০০ রুপির যন্ত্রের দাম চাওয়া হচ্ছে এক হাজার টাকারও বেশি। একটি থার্মোমিটারের দাম চাওয়া হচ্ছে ১ হাজার ৫০০ রুপি!
করোনা চিকিৎসার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন উপকরণের দাম কলকাতা শহরে এমনই আকাশছোঁয়া হয়ে গেছে বলে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। ভুক্তভোগীরা বলছেন, বেশি দামেও পাওয়া যাচ্ছে না এসব যন্ত্রাদি। অনেক ক্ষেত্রে এসব নিয়ে কালোবাজারিও শুরু হয়েছে। দোকান মালিকরা বলছেন, গুরুত্বপূর্ণ ওষুধও বাজার থেকে উধাও হয়ে যাচ্ছে।
এবারই প্রথম নয়, করোনার প্রথম ধাক্কাতেও একই অবস্থা হয়েছিল কলাকাতায়। সেসময়ও যন্ত্রপাতি-ওষুধের দাম ছিল আকাশছোঁয়া। পালস অক্সিমিটার, থার্মোমিটারের পাশাপাশি মাস্ক নিয়েও কালোবাজারির অভিযোগ ওঠে। সেসময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতায় দাম কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছিল।
গত বছর কলকাতায় করোনা চিকিৎসার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট যন্ত্রাদি ও ওষুধের দাম বেড়ে যাওয়ায় কড়া হুঁশিয়ারি দেন মূখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তৎপর হয়ে ওঠে। তবে এবার তেমনটা দেখা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
লেক টাউনের একটি ওষুধের দোকানের মালিক বলেন, এই মুহূর্তে পালস অক্সিমিটারের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। কিছুদিন আগেও ৫০০ রুপিতে কিনে ৭০০ রুপিতে বিক্রি করেছি। এবার ডিস্ট্রিবিউটররা একটি পালস অক্সিমিটারের জন্য হাজার টাকা করে চাইছেন।
তিনি বলেন, অক্সিমিটার নিয়ে কালোবাজারি হচ্ছে কি না, তা-ও তো জানি না। তাই এর সঙ্গে যুক্ত থাকব না ঠিক করেছি। শুধু অক্সিমিটার নয়, ডক্সিসাইক্লিন, মন্টেক এল সি বা আইভারমেকটিনের মতো ওষুধও পাওয়া যাচ্ছে না।
শ্যামবাজারের একটি ওষুধের দোকানের ব্যবস্থাপক বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, পুলিশের ভয়ে এবার মাস্ক নিয়ে তেমন কিছু হচ্ছে না। কিন্তু থার্মোমিটার, পালস অক্সিমিটার বা সুগার, প্রেশার মাপার যন্ত্র নিয়ে হাহাকার চলছে। গত চার দিন ধরে আমাদের কাছে একটাও অক্সিমিটার নেই। পুলিশ-প্রশাসনের আরও সতর্ক হওয়া উচিত।
সোমবার ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সবশেষ ২৪ ঘণ্টায় ভারতে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩ লাখ ৫২ হাজার ৯৯১ জন। আর এ রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২ হাজার ৮১২ জন।