দেশের তিন জেলায় র্যাব, পুলিশ ও বিজিবির সঙ্গে আলাদা তিনটি বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটেছে। এতে দুই রোহিঙ্গাসহ চারজন নিহত হয়েছেন। দুই রোহিঙ্গা মারা গেছেন কক্সবাজারের টেকনাফে। চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে র্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে এক ডাকাত মারা গেছেন। আর কুষ্টিয়ায় পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে মারা গেছেন এক মাদক কারবারি। ঢাকাটাইমসের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর।
কক্সবাজার: কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলায় বিজিবির সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে দুই রোহিঙ্গা নিহত হয়েছেন, যারা ইয়াবা চোরাকারবারি বলে দাবি করছে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীটি। শুক্রবার দিবাগত রাতে উপজেলার হ্নীলার ছুড়িখাল এমজি চেকপোস্ট সংলগ্ন এলাকায় এই বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে।নিহতরা হলেন-উখিয়ার বালুখালী রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরের এইচব্লকের মৃত ছৈয়দ আহমদের ছেলে আবদুস সালাম এবং একই ক্যাম্পের হাবিব উল্লাহর ছেলে ফেরদৌস।
টেকনাফ ২ বিজিবি ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক (সিও) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ ফয়সল হাসান খান জানান, টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের ছুড়িখাল চেকপোস্ট সংলগ্ন নাফ নদী দিয়ে মিয়ানমার থেকে ইয়াবার একটি বড় চালান টেকনাফে আসছে এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে লেদা বিওপির একটি বিশেষ টহলদল ওই এলাকায় অভিযানে যায়। এ সময় টহল দলের সদস্যরা তিনজনকে সাঁতার কেটে নাফ নদী পার হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে দেখে। ওই ব্যক্তিরা নদীর তীরে ওঠার সময় বিজিবির উপস্থিত টের পেয়ে ইয়াবা পাচারকারীরা অতর্কিতভাবে গুলি ছুড়লে বিজিবির তিন সদস্য আহত হন। আত্মরক্ষার্থে বিজিবির সদস্যরাও পাল্টা গুলি ছুড়লে একপর্যায়ে অস্ত্রধারীরা পালিয়ে যান।
গোলাগুলি থেমে গেলে বিজিবির সদস্যরা ঘটনাস্থল থেকে দুজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে। পরে আহত বিজিবি সদস্যসহ ও গুলিবিদ্ধ দুই ব্যক্তিকে দ্রুত টেকনাফ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক বিজিবি সদস্যদের চিকিৎসা দেয়। এছাড়া গুরুতর আহত গুলিবিদ্ধ দুই রোহিঙ্গাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হলে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
এছাড়া বন্দুকযুদ্ধের পর ঘটনাস্থল থেকে দুই লাখ ১০ হাজার পিস ইয়াবা, একটি দেশীয় তৈরি অস্ত্র, এক রাউন্ড তাজা কার্তুজ, একটি ধারালো কিরিচ উদ্ধার করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম: জেলার বাঁশখালী উপজেলার সরল এলাকায় র্যাবের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে শের আলী নামে এক ডাকাত নিহত হয়েছে। শের আলীর বিরুদ্ধে হত্যা, ডাকাতিসহ ১২টি মামলা রয়েছে।
শনিবার ভোরে বন্দুকযুদ্ধের এ ঘটনা ঘটে বলে দাবি র্যাবের। শের আলীর বাড়ি সরল ইউনিয়ন এলাকায়। ঘটনাস্থল থেকে তিনটি অস্ত্র ও ১৩ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে র্যাব।
র্যাব-৭ এর সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মো. মাহমুদুল হাসান মামুন বলেন, বাঁশখালীর সরল এলাকায় র্যাবের টহল দলের সঙ্গে ডাকাত দলের গোলাগুলি হয়। পরে ঘটনাস্থল থেকে একজনের গুলিবিদ্ধ মরদেহ পাওয়া যায়। ঘটনাস্থল থেকে তিনটি অস্ত্র ও ১৩ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, শের আলী একজন দুর্ধর্ষ ডাকাত। তার বিরুদ্ধে হত্যা, ডাকাতিসহ ১২টি মামলা রয়েছে।
কুষ্টিয়া: জেলার দৌলতপুরে পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ কুদরত আলী মণ্ডল নামে এক মাদক কারবারি নিহত হয়েছেন। শুক্রবার দিবাগত রাত একটার দিকে উপজেলার ডাংমড়কা সেন্টারমোড়ে আবুল কালাম আজাদের ইটভাটার সামনে এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে।
ঘটনাস্থল থেকে একটি বিদেশি পিস্তুল, তিন রাউন্ড গুলি, একটি ম্যাগজিন, একটি হাঁসুয়া ও ৪৩ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করেছে পুলিশ।
নিহত কুদরত আলীর বাড়ি উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের সীমান্ত সংলগ্ন মুন্সিগঞ্জ গ্রামে।
দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম আরিফুর রহমান জানান, মাদক বেচা-কেনার খবর পেয়ে রাতে ডাংমড়কা সেন্টারমোডে আবুল কালাম আজাদের ইটভাটায় অভিযান চালায় পুলিশ। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদক ব্যবসায়ীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়লে পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। একপর্যায়ে মাদক ব্যবসায়ীরা পালিয়ে গেলে ঘটনাস্থল থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় একজনকে উদ্ধার করে দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। এ সময় সেখানে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে নিহত ব্যক্তির নাম-পরিচয় জানা যায়। তার বিরুদ্ধে মাদক ও অস্ত্র আইনে অন্তত ছয়টি মামলা রয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশের এক সহকারী উপ-পরিদর্শকসহ (এএসআই) তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন বলে ওসি জানান।