করোনাভাইরাসে আক্রা’ন্ত হলে মানুষ কখন মা’রা যায়? চলুন জেনে নেয়া যাক

চীনের উহানে উৎপ’ত্তি হওয়া প্রা’ণঘা’তী করোনাভাইরাস এখন বিশ্বজু’ড়ে আ’ত’ঙ্কের সৃ’ষ্টি করেছে। এরই মধ্যে ১০৯টি দেশে ছ’ড়িয়েছে এই ভাইরাস। রোববার (০৮ মার্চ) সেই তালিকায় যু’ক্ত হয়েছে বাংলাদেশের নাম। নতুন এই ভাইরাসের প্রকো’প থেকে বাঁ’চতে অনেকেই আ’তঙ্কি’ত হয়ে খাদ্য সামগ্রী, মাস্ক এবং স্যানিটাইজার মজু’দ করছেন। তবে এই ভাই’রাস নিয়ে আত’ঙ্কি’ত না হয়ে সচে’তনতা অবল’ম্বনের পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষ’জ্ঞরা।

করোনায় প্রাণহাণির সংখ্যা গড়ে মাত্র ৩ দশমিক ৪ শতাংশ। যা প্রত্যেক বছরের মৌসুমী অন্যান্য ফ্লু’বাহিত রোগের প্রা’ণহা’নির মতোই। অযথা আ’তঙ্কি’ত না হয়ে বরং একটু সচে’তনতা অবল’ম্বন করলেই এই ভাইরাস তেমন কোনও ক্ষ’তি করতে পারবে না। করোনাভাইরাসে বিশ্বে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ২৭ জন মানুষ মা’রা গেছেন; যাদের অধিকাংশই আগে থেকে ডায়াবেটিস, কিডনি কিংবা অন্যান্য জটিল রোগে আ’ক্রা’ন্ত এবং বৃদ্ধ।

আশার কথা হচ্ছে, করোনায় আ’ক্রা’ন্ত মানেই মৃত্যু অবশ্য’ম্ভাবী নয়। বিশেষ’জ্ঞদের মতে, করোনা সং’ক্র’মণ একটি নির্দিষ্ট পর্যায় পার হলেই কেবল সেটি প্রা’ণঘা’তী হয়ে ওঠে। কী সেই পর্যায়? চলুন জেনে নেয়া যাক-

গত মাসে চীন ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সং’স্থার যৌথ অ’নুস’ন্ধানের এক প্রতিবে’দনে জানানো হয়েছে, করোনাভাইরাসের সং’ক্র’মণ নাক থেকে গলা পর্যন্ত থাকলে তাতে সর্দি, কাশি বা জ্ব’রের মতো সামান্য অসু’স্থতা দেখা দিতে পারে। কিন্তু, সং’ক্র’মণ ফু’সফু’স পর্যন্ত পৌঁছালেই বিপ’দ।

প্রায় ৫৬ হাজার কোভিড-১৯ রোগীর অবস্থা পর্যালো’চনা করে দেখা গেছে, করোনা আক্রা’ন্ত প্রতি সাতজনের একজন শ্বা’সক’ষ্টসহ অন্যন্য জ’টিল’তায় ভো’গেন। ছয় শতাংশ রোগীর অবস্থা সং’কটা’প’ন্ন হয়ে ওঠে। কখনও কখনও তাদের অব’স্থা সে’প্টি’ক শ’কে (র’ক্তচা’প কম, বিভিন্ন অ’ঙ্গে অ’ক্সিজে’ন সরব’রাহে বা’ধা) পরিণত হয়।

ডব্লিউএইচও’র সহকারী মহাপরিচালক ব্রুস এলওয়ার্ড বলেন, মৃ’দু বা মা’ঝারি সং’ক্র’মণ খুব দ্রু’ত গুরুতর অবস্থায় পরিণত হতে পারে। এ ধ’রনের ১০ থেকে ১৫ শতাংশ রোগী মা’রাত্ম’ক শারীরিক জ’টিল’তায় ভো’গেন এবং ১৫ থেকে ২০ শতাংশের অবস্থা আ’শঙ্কা’জ’নক হয়। ষাটোর্ধ্ব বয়স এবং উ’চ্চ র’ক্তচা’প, ডা’য়াবে’টিস ও কা’র্ডিওভা’সকু’লার রো’গীদের ক্ষে’ত্রে করোনায় মৃ’ত্যুঝুঁ’কি সবচেয়ে বেশি।

মেরিল্যান্ডের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব অ্যা’লার্জি অ্যান্ড ই’নফে’কশাস ডি’জিজে’সের ভাই’রাল প্যা’থোজে’নেসি’স অ্যান্ড ই’ভালু’শন বিভাগের প্রধান জেফ্রে কে টবানবার্গার বলেন, করোনাভাইরাস আ’ক্রা’ন্ত ব্যক্তিদের হাঁ’চি, কা’শি, ক’ফ বা শ্বা’স-প্র’শ্বা’সের মাধ্যমে অন্যদের ভেতর ছ’ড়াতে পারে। সাধারণত নাকের মধ্যে এর সং’ক্র’মণ শুরু হয়। একবার দেহে প্রবেশ করলে এটি শ্বা’সত’ন্ত্র র’ক্ষাকা’রী কো’ষগু’লোকে আ’ক্র’মণ করে। তবে, সং’ক্রম’ণ ওপরে আ’টকে রাখা গেলে জ’টিল’তা কমই থাকে।

তিনি বলেন, ফু’সফু’স আ’ক্রা’ন্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই মানবদে’হ ক্ষ’তপূ’রণে কাজ শুরু করে। প্রাথমিকভাবে, বিভিন্ন ধরনের শ্বে’ত ক’ণিকা ক্ষ’তিকর জীবা’ণুগুলো ন’ষ্ট করে দেয়। এই প্রক্রি’য়া ঠিক থাকলে সাধারণত কয়েক দিনের মধ্যেই সং’ক্র’মণ দূর হয়ে যায়।

ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব অ্যা’লা’র্জি অ্যান্ড ইন’ফেক’শাস ডি’জি’জেস পরিচালকের জ্যেষ্ঠ বৈজ্ঞা’নিক পরাম’র্শক ডেভিড মোরেনস বলেন, যখন কেউ খারা’প ধ’রনের ও অ’প্র’তিরো’ধ্য সং’ক্রম’ণের মু’খে পড়ে, তখন শরীরের সব ব্যবস্থাই এ’লোমে’লো হয়ে যায়। একবার বি’পদসী’মা পার হলে সেখান থেকে সহ’জে ফে’রত আনা যায় না।

বয়স্কদের ক্ষে’ত্রে এই বি’পদসী’মা পার হওয়ার হা’র সবচেয়ে বেশি। তবে, তরুণরাও ঝুঁ’কিমু’ক্ত নয়। উদাহরণস্ব’রূ’প, গত মাসে চীনের উহান সেন্ট্রাল হাসপাতালের চিকিৎসক লি ওয়েনলিয়াংয়ের মৃ’ত্যুর ঘ’টনা টে’নে আ’নেন আইওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অ’ণুজীব’বিদ্যা’র অধ্যাপক স্ট্যানলি পার্লম্যান।

তিনি বলেন, করোনা আ’ক্রা’ন্ত ৩৪ বছর বয়সী ওই চ’ক্ষুরো’গ বিশেষ’জ্ঞকে অ্যা’ন্টিব’ডি, অ্যা’ন্টিভা’ইরাল, অ্যা’ন্টিবায়ো’টিক, অ’ক্সিজে’ন, এমনকি কৃ’ত্রি’ম ফু’সফু’সের সাহা’য্যও দেয়া হয়েছিল। তারপরও মা’রা যান ডা. লি।

টবানবার্গার বলেন, কিছু লোক জি’নগতভাবেই বেশি সং’বেদ’নশী’ল হতে পারে। কারণ, শ্বা’সত’ন্ত্রের যে এ’পিথে’লি’য়াল কো’ষগু’লোতে ভাই’রাস আ’ক্র’মণ করে, তাদের সেই কো’ষে হয়তো স্ব’ত’ন্ত্র আ’কারের প্রো’টিন রি’সে’প্টর প্রচুর পরি’মাণে রয়েছে। তেমন, অনেকেরই রো’গপ্রতিরো’ধ ক্ষ’মতা কম বা অন্যান্য কারণে সং’ক্র’মণ বেশিও হতে পারে।

গত ৩১ ডিসেম্বর চীনের উহানে প্রথমবার করোনাভাইরাস শ’না’ক্ত হয়। এরপর দ্রু’তই ছ’ড়িয়ে পড়ে অন্যান্য অঞ্চলে। এ পর্যন্ত বিশ্বের অন্তত ১১৫টি দেশ ও অঞ্চলে ছ’ড়িয়েছে প্রা’ণঘা’তী এই ভাই’রাস। এতে মৃত্যু হয়েছে ৪ হাজার ২৭ জনের, আ’ক্রা’ন্তের সংখ্যা দাঁ’ড়িয়েছে ১ লাখ ১৪ হাজার ৪২২ জন। এর মধ্যে ৬৪ হাজার ৮১ জন সুস্থ হয়ে বাসায় ফি’রেছেন।