চীনে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত গুরুতর অবস্থার বেশ কয়েকজন রোগী আর্থ্রাইটিসের (বাঁত) ওষুধ ব্যবহারে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠেছেন বলে দাবি করেছেন দেশটির এক বিশেষজ্ঞ। শিয়াওলিং শু নামে ওই চিকিৎসকের মতে, এ পর্যন্ত যতজন করোনা আক্রান্ত রোগীর শরীরে টসিলিজুমাব (Tocilizumab) প্রয়োগ করা হয়েছে তাদের ৯৫ শতাংশই কয়েকদিনের মধ্যে সুস্থ হয়ে গেছেন।
টসিলিজুমাব সাধারণত অ্যাকটেমরা (Actemra) বা রোঅ্যাকটেমরা (RoActemra) নামে বাজারজাত করে সুইস ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি রোশে। এই ওষুধটি মূলত রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিসের রোগীদের শারীরিক প্রদাহ কমাতে ব্যবহৃত হয়।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল জানিয়েছে, গত ফেব্রুয়ারিতে চীনের চিকিৎসকরা করোনা আক্রান্ত ২০ জন সংকটাপন্ন রোগীকে টসিলিজুমাব ওষুধ দেন। তাদের মধ্যে ১৯ জনই দু’সপ্তাহের মধ্য পুরোপুরি সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন। আরেকজনের অবস্থাও উন্নতির দিকে।
এই খবরে আশার আলো দেখছেন করোনার প্রতিষেধক আবিষ্কারে নিয়োজিত গবেষকরা। কারণ, টসিলিজুমাব বাজারে বেশ সহজলভ্য। অনুমতি পেলেই করোনার চিকিৎসায় এটি ব্যাপক হারে ব্যবহার শুরু করা যাবে। চীনের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারাও ইতোমধ্যেই করোনা আক্রান্তদের মধ্যে যাদের ফুসফুসে সমস্যা হয়েছে তাদের শরীরে টসিলিজুমাব ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসনও (এফডিএ) এর ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের বিষয়ে সবুজ সংকেত দিয়েছে।
চিকিৎসকদের মতে, আর্থ্রাইটিসের রোগীদের শরীরে আইএল-৬ প্রোটিনের পরিমাণ বেড়ে যায়,যা প্রদাহসহ অন্যান্য শারীরিক সমস্যা তৈরি করে। টসিলিজুমাব এই প্রোটিনের প্রভাব কমাতে সাহায্য করে।
তবে কিছু বিশেষজ্ঞের মতে, এই ওষুধটি হৃদরোগ, স্ট্রোক, ফুসফুসের সমস্যাসহ বিভিন্ন ধরনের রোগ তৈরি করতে পারে। এমনকি এতে মৃত্যুও হতে পারে।
করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় টসিলিজুমাবের কার্যকারিতার বিষয়ে এখনও বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। তবে ডা. শিয়াওলিংয়ের মতে, চীনে এখনও ১৮৮ জন করোনা রোগীর ওপর এর পরীক্ষামূলক ব্যবহার চলছে। সেখানকার ফলাফল সারাবিশ্বের জন্যই আশাব্যাঞ্জক।