চীনের উহান থেকে গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস। মরণঘাতী এই ভাইরাসে মৃত্যু সংখ্যা ১৭ হাজার ছাড়িয়েছে। নতুন সংক্রমণ ঠেকাতে বিশ্ব যেন অবরুদ্ধ হয়ে পড়ছে। এমন সময় সেই চীনে আরেকটি ভাইরাসে মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
ওই ভাইরাসটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘হানতাভাইরাস’। এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে।
চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে টাইমস অব ইন্ডিয়া ও এনডিটিভি’র প্রতিবেদনে বলা হয়, চীনের ইউনান প্রদেশের এক বাসিন্দা গুতকাল গত সোমবার হনতাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বাসের মধ্যে মারা গেছেন। সতর্কতা তৈরির জন্য হানতাভাইরাস কী এবং এর লক্ষণগুলো জানা প্রয়োজন।
হানতাভাইরাস কী?
সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) বলছে, হানতাভাইরাস এক একটি ভাইরাসগোষ্ঠী, যা মূলত ইঁদুর থেকে সংক্রামিত হয়। এই ভাইরাসে আক্রান্ত হলে বিভিন্ন রোগের উপসর্গ দেখা যায়। অঞ্চলভেদে হানতাভাইরাস ভিন্ন ভিন্ন নামে পরিচিত। আমেরিকাতে ‘নিউ ওয়ার্ল্ড’ হানতাভাইরাস হিসাবে পরিচিত, অন্যদিকে ইউরোপ ও এশিয়াতে এটি ‘ওল্ড ওয়ার্ল্ড’ হানতাভাইরাস হিসাবে পরিচিত।
নিউ ওয়ার্ল্ড হানতাভাইরাসে আক্রান্ত হলে ফুসফুসজনিত উপসর্গ (এইচপিএস) দেখা দিতে পারে, অন্যদিকে ওল্ড ওয়ার্ল্ড হানতাভাইরাসে মুত্রাশয়জনিত উপসর্গ (এইচএফআরএস) দেখা দেয়। সঙ্গে রক্তক্ষরণ ও জ্বর হতে পারে।
হানতাভাইরাসের লক্ষণ
এইচপিএস’র লক্ষণ : এইচপিএস’র প্রাথমিক লক্ষণগুলোর মধ্যে ক্লান্তি, জ্বর এবং উরু, পশ্চাতদেশ, পিঠ, কাঁধসহ শরীরের বিভিন্ন পেশিতে ব্যথা হতে পারে। সংক্রামিত ব্যক্তি মাথাব্যথা, মাথাঘোরা, ঠাণ্ডা লাগা এবং পেটের সমস্যায়ও ভুগতে পারে। লক্ষণগুলো একটু দেরিতেও চার থেকে ১০ দিন পর দেখা দিতে পারে। সেক্ষেত্রে আক্রান্তদের কাশি ও শ্বাসকষ্ট হতে পারে, যা কিছুক্ষেত্রে মারাত্মক আকারও ধারণ করতে পারে।
এইচএফআরএস’র লক্ষণ : এইচএফআরএস’র ক্ষেত্রে ভাইরাসের সংস্পর্শে আসার পরে এক থেকে দুই সপ্তাহের মধ্যে লক্ষণগুলোর বিকাশ ঘটে। তবে কিছু ক্ষেত্রে লক্ষণগুলো দেখাতে আট সপ্তাহ পর্যন্ত সময় নিতে পারে। প্রাথমিক লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে তীব্র মাথাব্যথা, পিঠ ও পেটব্যথা, জ্বর, সর্দি, বমি বমি ভাব এবং ঝাপসা দৃষ্টি। অন্যদিকে, দেরিতে দেখা দিলে নিম্ন রক্তচাপ, তীব্র শক, রক্তনালীতে ছিদ্র ও তীব্র কিডনির ফেইলিউর হতে পারে।