থলের বিড়াল ফাঁস নয়ন বন্ড নয়, ২০ জনের কিলিং স্কোয়াডে রিফাত হত্যার নায়ক অন্য কেউ

বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে প্রকাশ্যে দিবালোকে রিফাত শরীফ (২৩) নামে এক যুবককে তার স্ত্রীর সামনে কুপিয়ে হত্যা মামলায় প্রধান আসামি সাব্বির আহম্মেদ ওরফে নয়ন বন্ড গত মঙ্গলবার (২ জুলাই) পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন।

এই ঘটনায় এতদিন নয়ন বন্ডকে কিলিং মিশনের নায়ক মনে করা হলেও শনিবার গণমাধ্যমে নতুন একটি ভিডিও প্রকাশের পর চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এসেছে।

গণমাধ্যমে আসা একটি সিসিটিভির ফুটেজের তথ্য মতে , রিফাতকে কুপিয়ে হত্যায় অভিযুক্তরা সকাল থেকেই বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে নানা পরিকল্পনা করতে থাকে। এক সময় কলেজ থেকে তারা জোর করে রিফাতকে বের করে নিয়ে যায়। পুরো হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ওইদিন সরাসরি ১৫ থেকে ২০ জন জড়িত ছিলো।

মূলত কিলিং মিশনে মূল ভূমিকা পালন করে ২ নম্বর আসামি রিফাত ফরাজি। মাত্র ২ মিনিটের মধ্যেই তাদের মিশন শেষ করে চলে যায় ‘বন্ড বাহিনী’।

রিফাতকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনার কিলিং মিশনে মূল ভূমিকা পালন করে ২ নম্বর আসামি রিফাত ফরাজি।

সিসিটিভির ফুটেজে দেখা যায়, হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়া রিফাত শরিফ ঘটনার দিন সকাল ১০টায় তার স্ত্রী মিন্নিকে নিতে সাদা একটি মোটরসাইকেলে কলেজে আসে। এসময় সকাল ১০টা ৩ মিনিটে বন্ড বাহিনীর প্রধান রিফাত ফরাজি ৬ থেকে ৭ জনকে নিয়ে কলেজ গেটের বাইরে গিয়ে অপেক্ষ করতে থাকে। দুই থেকে তিন মিনিট পরে আরো ২ থেকে ৩ জনকে কলেজে পাঠায় সে। ১০ টা ৯ মিনিটে ওই ২ থেকে ৩ জনসহ আরো কয়েকজনকে নিয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে রাস্তার উল্টো পাশে অবস্থান নেয়। এক মিনিট পরে ঘাতক রিফাত ফরাজি গেটের কাছে এসে আরো দুটি ছেলেকে কিছু নির্দেশনা দিয়ে উল্টো দিকে পাঠায়।

তারপর ১০ টা ১২ মিনিটে কলেজ থেকে বেরিয়ে রিফাত গাড়িতে ওঠার চেষ্টা করে। ঠিক ১০টা ১৩ মিনিটে রিফাত ফরাজি নিহত রিফাত শরিফকে কলেজেরে গেটে এসে বন্ড বাহিনীর সহায়তায় জোর করে নয়ন বন্ডের কাছে নিয়ে যায়।

সেখানে সবাই তাকে কিল ঘুষি মারতে থাকলে রিফাত ফরাজি ও একজন দৌড়ে গিয়ে তিনটি রামদা নিয়ে আসে। রিফাতের দুই হাতের দুটি দায়ের একটি নয়নকে দেয় ও আরেকটি দিয়ে নিজেই কোপাতে শুরু করে।

১০ টা ১৫ মিনিটে নয়ন, রিফাতসহ বন্ড বাহিনী কলেজ গেটের সামনে থেকে চলে যায়। আর ঘটনার ৮ মিনিট পরে দু’জন পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে তদন্ত শুরু করে।

প্রসঙ্গত, গত বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের মূল ফটকের সামনের রাস্তায় প্রকাশ্যে কুপিয়ে জখম করা হয় রিফাত শরীফ নামের এক তরুণকে। এ সময় বরগুনা সরকারি কলেজের স্নাতক প্রথম বর্ষের ছাত্রী আয়েশা সিদ্দিকা তার স্বামীকে রক্ষার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা চালান। কিন্তু সন্ত্রাসীরা তাকে (রিফাত) উপর্যুপরি কুপিয়ে গুরুতর জখম করে পালিয়ে যায়। বেলা তিনটার দিকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রিফাতের মৃত্যু হয়।