নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ঘোড়াশাল পৌর এলাকার চামড়ার গ্রামে সম্পত্তির লোভে এক কিশোরীকে পাগল দাবি করে শিকল দিয়ে বেঁধে রেখে নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে।
এ ঘটনায় এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হলে শনিবার সকালে পলাশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মকবুল হোসেন মোল্লা ঘরের তালা ভেঙে শিকলে বাধা অবস্থায় স্মৃতি রানী পাল (১৮) নামের ওই কিশোরীকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে স্মৃতির ভাই রনি পাল (২৫) পালিয়ে যান। পরে স্মৃতির চাচা রিপন পালকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ আটক করেছে।
নির্যাতিত স্মৃতি পৌর এলাকার চামড়াব গ্রামের মৃত দেবেশ চন্দ্র পালের মেয়ে।
স্থানীয়রা জানায়, চামড়ার গ্রামের দেবেশ চন্দ্র পাল প্রায় ৮ বছর ও তার স্ত্রী বিনা রানী পাল প্রায় ৫ বছর আগে মারা যান। তাদের রেখে যাওয়া প্রায় ১২০ শতাংশ জমি একমাত্র ছেলের রনি পাল ও একমাত্র মেয়ে স্মৃতি পাল ভোগ করে আসছিলেন। স্মৃতি রানী পাল ২০১৮ সালে পলাশের রাবন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করে এলাকায় বিনা বেতনে ছোট ছেলে মেয়েদের পড়াশোনা করাতেন। কিন্তু রনি পাল সকল সম্পত্তি একা ভোগ করার জন্য বোনকে কোন কলেজে ভর্তি না করিয়ে পাগল বানানোর চেষ্টা চালান। গত ১ মাস ধরে তাকে খাটের সঙ্গে পায়ে শিকল দিয়ে বেঁধে ঘরের দরজা-জানালা, ফ্যান ও লাইট বন্ধ করে অন্ধকারে ফেলে রাখেন।
স্মৃতি জানান, রনি পাল তাকে মানসিক নির্যাতন চালাতেন। এছাড়াও মাঝে মাঝে বিভিন্ন ইনজেকশন দিতেন ও ঘুমের ওষুধ খাওয়াতেন। গত ১ মাস তাকে ৩ বেলা ঠিকমতো খাবারও দেয়া হয়নি। এ সময় রনি পাল চাচা রিপন পালের শ্যালক পৌর এলাকার ভাগদী গ্রামের বাসিন্দা অপু পালের কাছে তার সমস্ত সম্পত্তি বিক্রির উদ্দেশ্যে ৪০ লাখ টাকা বায়না করেন।
আটক রিপন পাল জানান, বাকি টাকা নিয়ে ১ সপ্তাহের মধ্যে পরিশোধ করে বাড়িসহ জমি রেজিস্ট্রি করে দেওয়ার কথা ছিল রনির।
পলাশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মকবুল হোসেন মোল্লা জানান, শনিবার সকালে খবর পেয়ে স্মৃতি রানী পালকে শিকলে বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করে পলাশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করি। সে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিল। একটু সুস্থ হলে বিকেলে থানায় নিয়ে আসি। স্মৃতি পুরোপুরি সুস্থ হলে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।