প্রাণের গুঁড়া হলুদ, লাচ্ছা সেমাসম্প্রতি বিএসটিআইয়ের পরীক্ষায় মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর উপাদান থাকার বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় প্রাণের গুঁড়া হলুদ, কারি পাউডার, লাচ্ছা সেমাইসহ বিভিন্ন কোম্পানি ও ব্র্যান্ডের ৫২টি খাদ্যপণ্য বাজার থেকে প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
একই সঙ্গে এসব খাদ্যপণ্য বিক্রি ও সরবরাহে জড়িতদের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের প্রতি এ নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
যে ৫২টি খাদ্য পণ্য বিএসটিআই কর্তৃক মান পরীক্ষায় ব্যর্থ হয়েছে, সেই তালিকায় নির্দিষ্ট পাঁচ ধরনের খাবারের প্রাধান্য দেখা যাচ্ছে।
সেগুলো হলো- প্যাকেটজাত লবণ, তেল, হলুদ, লাচ্ছা সেমাই ও বোতলজাত পানি। বাজারের খুব নামকরা সব কোম্পানির খাদ্যপণ্য রয়েছে এর মধ্যে।
খাদ্যপণ্যে ভেজালের বিষয়ে নর্দান ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুষ্টিবিদ তাসনিম আশিক বলেন, লবণে আয়োডিনের মাত্রা বেশী, গুঁড়ো মশলায় কৃত্রিম রং মেশানো, লাচ্ছা সেমাইতে বাড়তি তেল অথবা চর্বি-জাতীয় পদার্থ আর বোতলজাত পানিতে জীবাণু ও সরিষার তেলে আয়রন- এগুলো মানবদেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এই ভেজাল খাদ্যপণ্য খেলে হার্টে ব্লক, ক্যানসার, লিভার ও কিডনি ড্যামেজ (নষ্ট) হয়ে যেতে পারে।
পুষ্টিবিদ আরও বলেন, লাচ্ছা সেমাইতে রয়েছে বাড়তি তেল অথবা চর্বি-জাতীয় পদার্থ। ফলে শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে হার্ট ব্লক হয়ে যেতে পারে। ফলে হতে পারে হার্ট অ্যাটাক।
এ সময় তিনি প্রাণের গুঁড়া হলুদ, কারি পাউডার, লাচ্ছা সেমাইসহ বিভিন্ন কোম্পানি ও ব্র্যান্ডের ৫২টি খাদ্যপণ্য না কিনতে সবাইকে পরামর্শ দেন।
নিচে বিএসটিআইয়ের পরীক্ষায় মানবদেহে মারাত্মক ক্ষতিকর উপাদান পাওয়া ৫টি পণ্যের বিষয়ে তুলে ধরা হলো-
লবণে আয়োডিনের মাত্রায় হেরফের
বিএসটিআইয়ের তালিকায় থাকা প্যাকেটজাত লবণগুলোতে আয়োডিনের মাত্রা ঠিক নেই। এমনো হয়েছে যে আয়োডিন দেয়া হয়নি ও পরিমাণ নির্ধারিত মাত্রার চেয়ে কম-বেশি হয়েছে।
মশলায় কৃত্রিম রং
গুঁড়ো মশলা দেখতে সুন্দর করতে কৃত্রিম রং মেশানো হচ্ছে। এর মধ্যে প্রাণের হলুদ গুঁড়োসহ আরও বেশ কয়েকটি পণ্য রয়েছে। কৃত্রিম রং মেশানোর এসব হলুদ বা মরিচের গুঁড়ো দেখতে সুন্দর মনে হলেও এতে মিশে যাচ্ছে সীসা ও আর্সেনিক।
লাচ্ছা সেমাই
বিএসটিআইয়ের তালিকায় থাকা লাচ্ছা সেমাইতে ফ্যাট পরিমাণ বেশি পাওয়া গেছে। এই সেমাই খেলে আমাদের শরীরে খাবার কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যেয়ে হার্ট ব্লক হয়ে যেতে পারে।
বোতলজাত পানিতে জীবাণু
পানিতে সবচেয়ে বেশি মারাত্নক রোগ হয়। তাই সুস্থভাবে বাঁচতে হলে বিশুদ্ধ পানির বিকল্প নেই। বেশ কিছু বোতলজাত পানিতে জীবাণু পেয়েছে বিএসটিআই। বিশুদ্ধ পানিতে একটি নির্ধারিত পিএইচ মাত্রা রয়েছে। সেই নির্দিষ্ট পিএইচ না থাকা মানে পানিটি বিশুদ্ধ নয়।
সরিষার তেল
সরিষার তেলে কোনো আয়রন বা লৌহ জাতীয় পদার্থ থাকার কথা নয়। তবে সরিষার তেলে পাওয়া গেছে আয়রন। সরিষার তেলের যে ঝাঁঝ বাড়ানোর জন্য, অন্যধরনের তেলের মধ্যে এক ধরনের কেমিকেল মিশিয়ে সেই ঝাঁঝ বানিয়ে সরিষার তেল বলে বিক্রি করা হয়।ইসহ ৫ পণ্যে ক্যান্সার ও লিভার-কিডনি ড্যামেজ!
বিডি মর্নিং