গাজীপুরে ছাত্রের মাকে দিনের পর দিন ধর্ষণ করে আসছিল গৃহ শিক্ষক

গাজীপুর জেলার টঙ্গীর সফিউদ্দিন সরকার একাডেমি স্কুল অ্যান্ড কলেজের পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রের মাকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে স্কুলের সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে। হাবিবুর রহমান হাবিব (৩৮) নামে ওই শিক্ষক গাজীপুর সিটি করপোরেশনের গাছা থানার কুনিয়া বড়বাড়ি এলাকার বাসিন্দা।

ভুক্তভোগী ওই অভিভাবক দুই দফায় সাবেক টঙ্গী থানা ও টঙ্গী পশ্চিম থানায় অভিযোগ করেছেন। তবে অভিযোগ উঠেছে, স্থানীয় এক ওয়ার্ড কাউন্সিলর সালিশি বৈঠকের মাধ্যমে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেছেন।

অভিযোগ সূত্রে, সফিউদ্দিন সরকার একাডেমি স্কুল অ্যান্ড কলেজের পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রকে বাসায় গিয়ে প্রাইভেট পড়াতেন একই স্কুলের সহকারী গণিত শিক্ষক হাবিবুর রহমান হাবিব। প্রতিদিনের মতো প্রাইভেট পড়াতে গত ৫ জুলাই সন্ধ্যায় কলেজ গেইট এলাকায় ছাত্রের বাসায় যান হাবিব। এসময় ওই ছাত্রের বাবা জরুরি কাজে বাইরে ছিলেন। এ সুযোগে শিক্ষক হাবিব তার ছাত্রকে অন্য একটি কক্ষে আটকে রেখে মাকে ধর্ষণ করেন এবং মোবাইলে ভিডিও ধারণ করেন।

ধর্ষিত ওই নারী ছেলের ভবিষ্যৎ, লোকলজ্জা ও সংসার ভাঙার ভয়ে ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দিয়ে রাখার চেষ্টা করেন। এ দুর্বলতার সুযোগে তাকে আবারো কুপ্রস্তাব দেন হাবিব। পরবর্তীতে গত ২৭ নভেম্বর ভিডিওটি ছাত্রের মায়ের মোবাইলে পাঠিয়ে আবার শারীরিক সম্পর্কের প্রস্তাব পাঠান শিক্ষক হাবিব। কিন্তু ভুক্তভোগী ওই নারী তার প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় শিক্ষক হাবিব দশ লাখ টাকা দাবি করেন। অন্যথায় গোপনে ধারণকৃত ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও ইউটিউবে ছেড়ে দেয়ার হুমকি দেন।

পরদিন ভুক্তভোগী ওই নারী স্কুলের প্রধান শিক্ষক মনিরুজ্জামানকে বিষয়টি জানান। কিন্তু প্রধান শিক্ষক কোনো পদক্ষেপ না নিয়ে শিক্ষক হাবিবুরকে ছুটিতে পাঠিয়ে দেন। বুধবার রাতে ওই ছাত্রের মা শিক্ষক হাবিবের বিরুদ্ধে টঙ্গী পশ্চিম থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। পরে পশ্চিম থানা পুলিশ অভিযুক্ত শিক্ষককে ওই রাতেই আটক করে থানায় নিয়ে আসে। তবে পুলিশ স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে নগদ টাকা জরিমানা আদায় করে তাকে ছেড়ে দেয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরে ওই ছাত্রের মা শিক্ষক হাবিবুর রহমান হাবিবের উপযুক্ত বিচারের দাবিতে স্থানীয় সংসদ সদস্য, জেলা প্রশাসক ও গাজীপুর প্রেসক্লাবে একটি চিঠি দেন।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সফিউদ্দিন স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক মনিরুজ্জামান বলেন, এ ঘটনায় আমি মর্মাহত। সে আমাদের পুরো শিক্ষক সমাজকে কলঙ্কিত করেছে। তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটিকে ১০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য বলা হয়েছে।

এ ব্যাপারে টঙ্গী পশ্চিম থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. এমদাদুল হক বলেন, ভুক্তভোগী ওই নারী থানায় বসে বিষয়টি আপস মীমাংসা করেছেন।

সূত্র: বাংলাদেশ জার্নাল