রাজধানীতে বাবার হাতে ৩ বছরের শিশু খুন, বাসায় কাউকে ঢুকতে দিচ্ছেন না বাবা

রাজধানীর বাংলামোটরে তিন বছরের এক শিশু খুন হয়েছে। শিশুটির মাদকাসক্ত বাবা নুরুজ্জামান কাজল (৩৫) তাকে খুন করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

বাসার ভেতরে ধারালো দা হাতে বসে আছেন শিশুটির বাবা নুরুজ্জামান কাজল। তিনিই কাউকে ঢুকতে দিচ্ছেন না। আবার কাজলের ভাই নুরুল হুদা উজ্জ্বল বলছেন, কাজলই ‘খুন’ করেছেন সাফায়েতকে।

বুধবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে বাংলামোটরের ১৬ নম্বর লিংক রোডের ওই বাড়ির দোতলা বাসায় শিশুটির মৃত্যুর খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় শাহবাগ থানা পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।

ঘটনাস্থলে আগে থেকেই ভিড় জমিয়েছেন কাজলের স্বজন ও প্রতিবেশীরা। সেখানে থাকা কাজলের ভাই নুরুল হুদা উজ্জ্বল বলেন, কাজলের দুই সন্তান। একজন সাফায়েত, তার বড় আরেকজন আছে সুরায়েত। আমরা সাফায়েতের মৃত্যুর সংবাদ শুনে ঘটনাস্থলে এসেছি। সকালে ঢুকতে গিয়েও পারিনি।

কাজলকে মাদকাসক্ত দাবি করে উজ্জ্বল বলেন, বাবাই খুন করেছেন সাফায়েতকে। কারণ কাজল মাদকাসক্ত। আর আমরা যখন বাসায় ঢুকতে গেছি, তখন কাজল আমাদের দিকে দা নিয়ে তেড়ে আসেন। সুরায়েত বাবার কাছেই আছে।

অবশ্য ঘটনাস্থলে থাকা কয়েকজন প্রতিবেশী বলেন, কাজল ও উজ্জ্বলের মধ্যে পৈতৃক সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ আছে।

ঘটনাস্থলে থাকা শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান বলেন, একটা বাচ্চা মারা যাওয়ার খবরে ছুটে এসেছি। কিন্তু আমরা বাসার ভেতরে ঢুকতে পারছি না। ভেতরে রয়েছেন শিশুটির বাবা কাজল। তাকে বুঝিয়েও বাসায় ঢুকতে পারিনি। এখন বিকল্প কোনো উপায় বের করতে হবে।

র‌্যাব-২ এর উপ-পরিদর্শক (এসআই) শহীদুল ইসলাম বলেন, আমরা কাজলের দোতলার বাসায় ঢোকার চেষ্টা করেও পারিনি। তিনি এক সন্তানকে বুকে জড়িয়ে রেখেছেন। হাতে তার দা। আরেক সন্তানকে কাফনের কাপড় পরিয়ে টেবিলের ওপর রেখেছেন। ভেতরে হুজুরের মতো একজনও দেখতে পেলাম।

কাফনের কাপড়ে রক্ত দেখা গেছে কি-না, জানতে চাইলে এসআই বলেন, রক্ত দেখলাম না। আমরা বোঝাতে চাইলেও কাজল বলছেন, কে ডেকেছে আপনাদের? আপনাদের আসার দরকার নেই। ১টা বাজলেই আমার সন্তানকে দাফন করবো। আপনারা চলে যান।

কাজলকে মাদকাসক্ত মনে হয়েছে বলেও জানান এসআই শহীদুল ইসলাম।

সূত্র: বাংলানিউজ, যুগান্তর