বর্তমানে সমগ্র পৃথিবীতেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। পারিবারিকভাবে এই রোগের ঐতিহ্য থাকা, অনিয়ন্ত্রিত জীবনপদ্ধতি, ত্রুটিযুক্ত খাদ্যাভ্যাস, মানসিকচাপসহ আরো অনেক কারণ রয়েছে যেগুলো অকালেই হৃদযন্ত্রের ক্ষতি করে আপনার মৃত্যু ডেকে আনতে পারে। চলুন জেনে নেয়া যাক হৃদরোগের কিছু উল্লেখযোগ্য কারণ।
১. অতিরিক্ত মেদ: যুক্তরাষ্ট্রের ইনডিয়ানা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় দেখা গেছে, শরীরে ভাল কোলেস্টেরলের পরিমাণ কম থাকলে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। তবে অতিরিক্ত ফ্যাট ও চর্বিযুক্ত খাবার হৃদযন্ত্রকে বিকল করে দিতে পারে। সুতরাং অতিরিক্ত শরীরে মেদ যাতে না জমে সেদিকে আপনাকে অবশ্যই লক্ষ্য রাখতে হবে।
২. শরীরে অন্যান্য রোগের সংক্রমণ: শরীরে যদি কোন ধরনের সংক্রমণ থাকে তাহলেও হৃদরোগের ঝুঁকি দেখা দেয়। কারণ সংক্রমণের কারণে শরীরে ইনফ্লামেটরি দেখা দেয়, ফলে হৃদরোগ ও ষ্ট্রোকের সম্ভাবনা বাড়ে।
৩. দুর্বল কিডনি: নেদারল্যান্ডস থেকে করা এক গবেষণায় জানা গেছে, যাদের কিডনি কিছুটা দুর্বল, কিডনির মারাত্মক সমস্যা না থাকলেও তারা হৃদরোগে আক্রান্ত হতে পারেন।
৪. ট্রাফিক জ্যামের চাপ: গাড়ি, বাইক অথবা বাস যাতেই থাকুন না কেন নগর জীবনের অসহনীয় ট্রাফিক জ্যামে পড়লে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে। এর আগে আরেক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রধান সড়কের কাছাকাছি যারা বসবাস করেন তাদের হৃদরোগজনিত জটিলতা বাড়ে।
৫. ক্যালসিয়াম সাপ্লিমেন্ট: নিউজিল্যান্ডে করা এক গবেষণায় জানা গেছে, যেসব নারী টানা পাঁচ বছর ধরে ক্যালসিয়াম সাপ্লিমেন্ট খাচ্ছেন তারা হৃদরোগের ঝুঁকিতে আছেন। অন্যদিকে আরেকটি গবেষণা বলছে, যারা প্রতিদিন ৫০০ গ্রাম ক্যালসিয়াম সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করেন তাদের হৃদরোগের ঝুঁকি ৩০ শতাংশ বেড়ে যায়।
৬. অ্যাসপিরিন ব্যবহারে অসতর্কতা: এক গবেষণায় দেখা গেছে, হৃদরোগের সমস্যায় ভূগছেন এমন যারা ঝুঁকিতে রয়েছেন তারা যদি হঠাৎ করে অ্যাসপিরিন থেরাপি বা ননস্টেরিউডাল ওষুধ বন্ধ করে দেন তাহলে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ম্যাথিউ সরেনটিনো বলেন, ‘যদি কারও হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে এবং কেউ যদি অ্যাসপারিন জাতীয় ওষুধ বন্ধ করতে চান তাহলে তা ধীরে ধীরে করুন অথবা চিকিৎসকের পরামর্শ নিন’।
এছাড়া যুক্তরাজ্যের গবেষকদের মতে, দাম্পত্য সম্পর্ক খারাপ থাকলেও সঙ্গীর হৃদরোগের ঝুঁকি শতকরা ৩৪ ভাগ বেড়ে যায়।