বিশ্বে প্রায় ৮০ মিলিয়ন প্রাণী রয়েছে। তাদের মাঝে প্রায় সাত লাখ পশু শ্রেণীভুক্ত। আর এসব প্রাণীদের প্রায় সবাই কাঁচা খাবার খেয়েই বাঁচে। এদের মধ্যে ব্যতিক্রম হচ্ছে একমাত্র মানবকূল। মানুষ নিজেই আগুন আবিস্কার করে তা দিয়ে পুড়িয়ে বা রান্না করে খাবার খেতে শুরু করে। খাবার সুস্বাদু এবং ভোজনের যোগ্য করার জন্যই মানুষ মূলত তা রান্না করে বা আগুনে পোড়ায়। তবে রান্না করে খাবার খাওয়ার ফলে মানুষের আয়ু যে বেড়েছে এরকম কোনো প্রমাণ নেই।
মানুষকে বিভিন্ন ক্রনিক রোগে ভুগতে হয় অনেক বেশি। মানুষের বিভিন্ন মারাত্মক রোগের মধ্যে রয়েছে ক্যান্সার, আথ্রাইটিস ও অন্যান্য জীবাণুবাহিত রোগ। এসব রোগের অনেকগুলোর কারণই খাবার। মানুষের আয়ু হতে পারত ১২০ থেকে ১৪০ বছর পর্যন্ত। কিন্তু তা হচ্ছে না নানা কারণে।
গবেষকদের মত, আগুনের মাধ্যমে মাত্রাতিরিক্ত তাপ দিয়ে রান্না করে খাওয়ার প্রবণতা মোটেও ভালো নয়। এ বিষয়ে ড. বেটেল পিএস বলেন, ‘পোড়া পুষ্টি হলো নিরব ঘাতক। ধীরে ধীরে এসব পদার্থ আমাদের দেহে তাদের ক্ষতিকর প্রভাব বিস্তার করে।’
খাবার গরম করলে তা থেকে যেসব প্রতিক্রিয়া হয় তার মধ্যে রয়েছে প্রোটিনে পরিবর্তন, কার্বহাইড্রেটের স্বাভাবিকতা হারানো, ফ্যাট পরিবর্তিত হয়ে হাইড্রোকার্বন, নাইট্রোসামাইনস, অ্যাক্রোলিন ও বেনজোপাইরেনে (ক্যান্সারের অন্যতম কারণ) পরিণত হয়। এছাড়া এর ফলে ৫০ শতাংশ ভিটামিন ও মিনারেল নষ্ট হয়ে যায়। পাশাপাশি শতভাগ এনজাইমও এতে নষ্ট হয়ে যায়। রান্না করার ফলে খাবারের ফাইবার নষ্ট হয়। এতে সেলুলোজগুলো দেহের অভ্যন্তরভাগ পরিষ্কার করার ক্ষমতা হারায়।
এসব সমস্যা এড়াতে বেশি করে কাঁচা ফলমূল ও অন্যান্য খাবার খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন গবেষকরা। এজন্য তাদের দৃষ্টিতে কিছু পরামর্শ রয়েছে যেমন :
১. রান্না না করেই খাবার খেতে হবে। তবে এক্ষেত্রে যে কোনো খাবার খাওয়া যাবে না। যেসব খাবার পেটে সহ্য হয় শুধু সেসব খাবারই খেতে হবে।
২. যথাসম্ভব রান্না করা খাবার ও প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলতে হবে এবং কাঁচা ও রান্নাবিহীন খাবার, সবজি ও সালাদ বাড়াতে হবে।