‘গোল্ডেন বল’ মদ্রিচেরই, ‘বুট’ হ্যারি কেনের

অনেকবার বলেছেন, ব্যালন ডি’অর নিয়ে চিন্তিত নন তিনি। তার ভাবনায় শুধু বিশ্বকাপ। এবং শেষে বলেছেন, বিশ্বকাপ জিততে পারলে আর কি লাগে? কিন্তু সেই বিশ্বকাপটা জেতা হলো না ক্রোয়াট রূপকথার মহানায়ক লুকা মদ্রিচের। রোববার রাশিয়া বিশ্বকাপে মস্কোতে ফাইনালে ফ্রান্সের কাছে তার দল ৪-২ গোলে হেরে হয়েছে রানার্স আপ। তবে পুরো টুর্নামেন্টে অসাধারণ নিপুণ খেলার ব্যক্তিগত পুরস্কারটা ঠিকই পেয়েছেন ক্রোয়েশিয়ার রাজা। বেলজিয়ামের ইডেন হ্যাজার্ড ও ফ্রান্সের আঁতোয়া গ্রিজমানকে পেছনে ফেলে ২০১৮ বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার ‘গোল্ডেন বল’টা উঠেছে তারই হাতে।

ক্রোয়েশিয়ান এই মিডফিল্ডার দলটির অধিনায়ক। গ্রুপর্বে দুটি গোল করেছেন। ক্রোয়েশিয়াকে ফাইনালে তুলতে দুটি পেনাল্টি শ্যুট আউটের দুটি শটেই গোল করেছেন। পুরো দলকে খেলিয়েছেন। ধাপের পর ধাপ পেরিয়ে দেশের ১৯৯৮ এর সাফল্য বিশ্বকাপ সেমি ফাইনালে খেলার রেকর্ডটাকে টপকে গেছেন।

মাত্র ৪৫ লাখ মানুষের দেশ ক্রোয়েশিয়াকে নিয়ে গেছেন ফাইনালে। ওখানেও শুরু থেকে ফরাসিদের বিপক্ষে নানা আক্রমণ রচনায় দিয়েছেন নেতৃত্ব। এদিন ভাগ্য সাথে থাকেনি ক্রোয়েশিয়ার। রানার্স আপ হতে হয়েছে স্বপ্নের ট্রফিটাতে চুমু খাওয়ার খুব কাছে গিয়েও। দেশের পক্ষে ২০০৬ থেকে এ পর্যন্ত ১১৩টি ম্যাচ খেলেছেন মদ্রিচ।

১৯৯১ সালে জন্ম নেওয়া দেশ ক্রোয়েশিয়ার দ্বিতীয় সোনালী প্রজন্মের অধিনায়ক মদ্রিচ ফাইনালে হেরে বিষন্ন ছিলেন। এর মধ্যে এল লুঝনিকি স্টেডিয়ামে বৃষ্টি। চোখে জল থাকলে সেটা হয়তো বৃষ্টিতে ধুয়ে গেল। ক্রোয়াট প্রেসিডেন্ট কলিন্দা গ্রাবার-কিতারোভিচ সানন্দে তাকে আলিঙ্গন করলেন পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে। রিয়াল মাদ্রিদ তারকা মদ্রিচের পেছনে থেকে সিলভার বল জিতেছেন হ্যাজার্ড, গ্রিজমান পেয়েছেন ব্রোঞ্জ বল।

মদ্রিচ টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়। ১৯ বছরের ফরাসি সেনসেশন কিলিয়ান এমবাপে এই আসরে ৪টি গোল করেছেন। ফাইনালের চতুর্থ গোলটি তার। এমবাপে জিতেছেন বিশ্বকাপের সেরা তরুণ খেলোয়াড়ের পুরস্কার। বেলজিয়ামের গোলকিপার থিবাত কুর্তোইস টুর্নামেন্টের সেরা গোলকিপারের পুরস্কার জিতেছেন।

এই পুরস্কারটি সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের (বর্তমান রাশিয়া) কিংবদন্তি গোলরক্ষক লেভ ইয়াশিনের নামে দেওয়া হয়। তাই এটিকে লেভ ইয়াশিন গোল্ডেন গ্লাভস অ্যাওয়ার্ড বলা হয়। কুর্তোইসদের বেলজিয়াম তৃতীয় হয়েছে এবারের বিশ্বকাপে। সাত ম্যাচে এই গোলরক্ষককে ফাঁকি দিয়ে তার জালে বল ঢুকেছে মাত্র ৬ বার। তিন ম্যাচে তার দল পেয়েছে ক্লিন শিট।

ফ্রান্স-ক্রোয়েশিয়া ফাইনালের শেষ বাঁশির সাথেই নিশ্চিত হয়ে যায় গোল্ডেন বুটটা ইংল্যান্ডের অধিনায়ক হ্যারি কেনের। রাশিয়া বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ ৬ গোল করেছেন তিনি।

১৯৮৬ সালে গ্যারি লিনেকারের পর দ্বিতীয় ইংলিশ হিসেবে এই স্ট্রাইকার পুরস্কারটি জিতলেন। চারটি গোল করা গ্রিজমান পেয়েছেন গোল্ডেন বুট, চারটি গোল করেই বেলজিয়ান স্ট্রাইকার রোমেলু লুকাকু জিতেছেন ব্রোঞ্জ বুট। এমবাপে, পর্তুগালের ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো, রাশিয়ার দেনিস চেরিশেভও চারটি করে গোল করেছেন। গ্রিজমানের দুটি অ্যাসিস্ট ছিল। লুকাকুর ছিল একটি। অন্যদের তা ছিল না।

স্পেন জিতেছে ফিফা ফেয়ার প্লে অ্যাওয়ার্ড। ২০১০ সালের চ্যাম্পিয়নরা এবার চার ম্যাচে মাত্র দুটি হলুদ কার্ড দেখেছে।