গৌছ উদ্দিনের সঙ্গে ফরিদা বেগমের প্রায় ছয় বছর আগে বিয়ে হয়। বিয়ের তিন বছর যেতে না যেতে তাদের ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। তারপর ফরিদা বেগম বাবার বাড়িতে চলে যায়। এরই সুযোগে পাশের গ্রামের জুমেল আহমদের প্রেমে পড়ে যান ফরিদা বেগম।
এর মধ্যে জুমেল অন্যত্র বিয়ে করেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। এক পর্যায়ে ফরিদা জুমেলকে মামলার হুমকি দিলে ফরিদাকেই সরিয়ে দেয়ার নীল নকশা আঁকেন জুমেল।পরে গত ১৩ জুন উপজেলার উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়নের ইসলামপুর এলাকায় একটি খেত থেকে ফরিদা বেগমের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
নিহত ফরিদা ইসলামপুর গ্রামের খলকু মিয়ার মেয়ে। পরবর্তীতে ফরিদার মা পিয়ারা বেগম বাদী হয়ে মামলা করেন। পুলিশ প্রযুক্তির সহায়তায় ফরিদা হত্যায় জুমেল আহমদের সম্পৃক্ততার প্রমাণ পায়।এরপর গত ২ জুলাই অভিযান চালিয়ে চান্দগ্রাম এলাকা থেকে মো. জুমেল আহমদ ওরফে জুবেলকে (২৫) গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে তাকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়। হত্যার রহস্য উদঘাটনের জন্য তদন্ত কর্মকর্তা গত ৯ জুলাই আদালতে জুমেলকে ১০ দিনের রিমান্ডে নেয়ার আবেদন করেন।
শুনানি শেষে আদালত জুমেলের ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কাছে জুমেল হত্যার বিষয়ে প্রাথমিক স্বীকারোক্তি প্রদান করে সহযোগীদের নাম বলে।তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দফতরি জাকির আহমদকে (২৫) গ্রেফতার করে। রিমান্ড শেষে ১২ জুলাই বিকেলে বড়লেখার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মো. হাসান জামানের আদালতে জুমেলকে হাজির করলে তিনি হত্যায় জড়িত থাকার বিষয়ে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
পরে জুমেল ও তার সহযোগী জাকিরকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। আসামিদের দেওয়া জবানবন্দিতে বেরিয়ে আসে ফরিদা বেগমকে হত্যার ভয়ঙ্কর তথ্য।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই ওয়াহেদ গাজী বিষয়টি নিশ্চিত করে তিনি বলেন, তিনজন মিলে ফরিদাকে হত্যা করে। প্রেমঘটিত বিষয় নিয়ে পরিকল্পিতভাবে এ হত্যাকাণ্ড। এ পর্যন্ত দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পলাতক অন্য আসামিকে গ্রেফতার চেষ্টা অব্যাহত আছে।প্রেমিক জুমেল আহমদের জবানবন্দি থেকে জানা যায়, ১২ জুন রাতে জুমেল কয়েকজন সহযোগী নিয়ে ফরিদার বাড়িতে গিয়ে তাকে মুঠোফোনে কল করে ডেকে আনেন। পরে সহযোগীদের নিয়ে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর বাড়ির পাশের খেতে ফেলে চলে যান।