কোটা সংস্কার আন্দোলনের যুগ্ম-আহ্বায়ক ফারুক হাসানকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে ছাত্রলীগের হামলা থেকে বাঁচাতে গিয়ে নিজেই নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী মরিয়ম মান্নান।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলের সামনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, যখন আমাকে তুলে সিএনজির ভিতরে করে নিয়ে যাওয়া হয়, তখন সিএনজির প্রত্যেকটা মূহূর্ত ছিল আমার কাছে জাহান্নাম। পরে আমি ভাবছি হয়তো থানায় গেলে আমি সেইভ থাকবো। কিন্তু না, থানা ছিল আমার জন্য সেকেন্ড জাহান্নাম।
মরিয়ম বলেন, ‘ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে একটি কর্মসূচীতে অংশ নিতে আমি সেদিন সোমবার (২ জুলাই) শহীদ মিনারে গিয়েছিলাম। এর আগে আমি ফারুক ভাইকে ব্যক্তিগতভাবে চিনতাম না। এসে দেখি কিছু লোক ফারুক ভাইকে প্রচুর মারছে। তখন এ দৃশ্য দেখে আমি ফারুক ভাইকে বাঁচাতে এগিয়ে যাই।’
“তারা ভাইকে এমনভাবে মারছে, তা দেখে শুধু আমি না, যে কেউ এগিয়ে যাবে। তারপর আমি ফারুক ভাইকে একটি রিক্সায় তুলতে চাইলে ছাত্রলীগের নেতারা ফারুক ভাইকে মেরে একটি মোটরসাইকেলে করে তুলে নিয়ে যায়।”
মরিয়ম আরও বলেন, তারপর তারা আমাকে ধরে নিয়ে আমার শরীরের কোন কোন জায়গায় হাত দিছে তা আপনারা শুনতে চান? আপনারা আমাকে সিমপ্যাথি দেখাতে আসবেন না। সিমপ্যাথি নেয়ার মেয়ে আমি না। আমি ইনটেনশনালি এই আন্দোলনে এসেছি।
“অ্যাজ এ হিউম্যান, আমার কিছু রাইটস আছে। যদি আমার কোনো অন্যায় হয়ে থাকে, তাহলে পুলিশ আমাকে ধরে নিয়ে যেতে পারতো। আমাকে কোর্টে চালান করে দিতে পারতো। কিন্তু বাহিরের ছেলেরা কেন আমাকে তুলে নিয়ে যাবে। কেন তারা আমার গায়ে টাচ করবে? এটা শুনতে ইচ্ছা করছে আপনাদের?”
মরিয়ম বলেন, তারা আমাকে একটি সিএনজিতে করে থানায় নিয়ে যায়। আমার সাথে খুব বাজে ব্যবহার করেছে। আমি যখন সিএনজিতে ছিলাম,তখন সিএনজির প্রত্যেকটা মূহূর্ত ছিল আমার কাছে জাহান্নাম। পরে আমি ভেবেছি হয়তো থানায় গেলে আমি সেইভ থাকবো। কিন্তু না, থানা ছিল আমার জন্য সেকেন্ড জাহান্নাম।
“আমার সাথে যেটা হয়েছে, তা আপনাদের সামনে বলতে আমার খুব খারাপ লাগছে।”
গত সোমবার শহীদ মিনারে ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদ জানাতে পূর্বঘোষিত কর্মসূচী অনুযায়ী আন্দোলনকারীরা সেখানে জড়ো হতে চেষ্টা করলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায় বলে আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করেন।
এসময় ঘটনাস্থল থেকে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম-আহ্বায়ক ফারুক হাসানকে কিল, লাথি, ঘুষি দিয়ে তুলে নিয়ে শাহবাগ থানায় পুলিশকে সোপর্দ করা হয়। তখন আন্দোলনকারী মরিয়ম ফারুককে বাঁচাতে গেলে তাকেও ছাত্রলীগ কর্মীরা তুলে নিয়ে নির্যাতন করে বলে অভিযোগ উঠে।