ওরা সাতজন। সাতজনই মহিলা। সবাই যাত্রী। সবসময়ই যাত্রী। দিনেও যাত্রী। রাতেও যাত্রী। সারাদিনই যাত্রার উপরে থাকেন তারা। কখনো বাসে। কখনো বা রাইডারে।
যাত্রাতেই পার হয় তাদের রাত ও দিন। সাধারণত যেসব গাড়িতে মেয়ে কম কিন্তু ভিড় বেশি সেসব গাড়িতেই তারা বেশি স্বাচ্ছন্দবোধ করেন। আর সেই মেয়ে যদি দাঁড়ানো থাকে তাহলে তো আর কথাই নেই। এসব গাড়িতে উঠে প্রথমেই তারা দাঁড়ানো মেয়েটির চারপাশে দাঁড়িয়ে যায়। এরপর খানাখন্দকে গাড়ির লক্কড়ঝক্কর লাফ, যাত্রীর ভিড় সাথে এসব মহিলাদের ঠেলাঠেলি পেরিয়ে মহিলা যাত্রীরা গন্তব্যে পৌঁছে দেখে হয়তো তার ব্যাগ বা মোবাইল নেই। মূলত যাত্রী সেজে ছিনতাই করে ওরা।
এমনই এক ঘটনা ঘটেছে গতকাল শুক্রবার নগরীর কোতোয়ালী এলাকায়। একটি বাসে করে যাচ্ছিলেন রুমু নামের এক মেয়ে। কিছুদূর যেতেই দেখেন পাঁচ-ছয়জন মহিলা হুড়োহুড়ি করে বাসে উঠল। এরপর বাস চলা শুরু করলেই রুমু এসব মহিলার অস্বাভাবিক আচরণ লক্ষ্য করেন। পর্যাপ্ত জায়গা থাকা সত্ত্বেও গায়ে লেগে থাকা, ইচ্ছাকৃতভাবে ধাক্কা দেয়া, কৃত্রিম ভিড় সৃষ্টি করা। এর ফাঁকেই হঠাৎ তিনি তার ঘাড়ে একটা স্পর্শ অনুভব করেন। হাত দেওয়ার সাথে সাথেই দেখেন তার গলায় থাকা স্বর্ণের চেইন উধাও। সাথে সাথেই তিনি চিৎকার করে পাশে থাকা একজনকে ধরে ফেলেন। অন্য যাত্রীরা এসময় ছুটে এলে সুযোগ বুঝে কিছু মহিলা পালিয়ে যায়।
রুমু ধরে ফেলে একজনকে। কিন্তু ওই মহিলা সবকিছু অস্বীকার শুরু করে। এক পর্যায়ে সবাই মিলে সেখানকার টহল পুলিশের সহযোগিতা গ্রহণ করে। টহল পুলিশ প্রথমেই আটককৃত মহিলার কাছ থেকে ছিনতাইয়ের কথার স্বীকারোক্তি গ্রহণ করে। পরবর্তীতে তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী নগরী এবং সীতাকুণ্ডের বিভিন্ন স্থান থেকে যাত্রা ভয়ঙ্কর করা ভয়ঙ্কর এই সাত ‘যাত্রী’ কে আটক করে। এসময় উদ্ধার করা হয় সেই স্বর্ণের চেইনও। পরে তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার আইনে মামলা করা হয়।
আটককৃত সাত ভয়ঙ্কর যাত্রী হলেন- মোছাম্মৎ রাহেলা (৪০), মোছাম্মৎ আফিয়া বেগম (১৮), ফুলতারা বেগম (২২), শাহার বানু (৫৫), সুলতানা বেগম (২৩), নাজমা বেগম (৩৫) ও মরিয়ম বেগম (২৫) ।
এ ব্যাপারে কোতোয়ালী থানার ওসি মোহাম্মদ মহসিন সিভয়েসকে বলেন, এরা হলো ভয়ঙ্কর যাত্রী। এদের বিরুদ্ধে পুলিশ সচেতন রয়েছে। এ ধরনের যাত্রীদের খপ্পরে পড়লে সাথে সাথে পুলিশকে জানানোর জন্য অনরোধ করছি।