এই ঘটনাটি ঘটে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চর রমনী মোহন ইউনিয়নের করাতির হাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। তিন বছর পূর্বে খন্ডকালীন শিক্ষক নিযুক্ত হন তোফায়েল আহমদ।
লক্ষ্মীপুরে কোরান-হাদিসের ভয় দেখিয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোমলমতি অসংখ্য শিশু ছাত্রীকে যৌন হয়রানি করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বিদ্যালয়টির খন্ডকালীন শিক্ষক তোফায়েল আহমদের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠার পর থেকে সে এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে বলে জানান স্থানীয়রা।
তবে এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবার ও গ্রামবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান সংশ্লিষ্টরা। এদিকে ঘটনার তদন্তে আজ দুপুরে তিন সদস্যের একটি টিম গঠনসহ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান উপজেলা প্রশাসন।তার বাড়ি সদর উপজেলার মাছিম নগর গ্রামে। নিয়োগ পাওয়ার পর স্থানীয় হাওলাদার বাড়িতে লজিং মাষ্টার থেকে পাশ্ববর্তী একটি মসজিদে ইমামতি করতেন। পাশাপাশি সকালে আরবি শিক্ষা ও রাতে প্রাইভেট পড়াতেন ওই শিক্ষক।
এ সুবাধে কোমলমতি শিশু ছাত্রীদের কোরান হাদীসের ভয় দেখিয়ে শিক্ষকের সকল কথা মানতে অনুরোধ করে যৌন হয়রাণি (ধর্ষণ ও শ্লীলতাহানি) করে আসছিলেন শিক্ষক তোফায়েল। মঙ্গলবার (২৬ জুন) একইভাবে এক ছাত্রীকে এমন কাজ করলে সে বিষয়টি পরিবারকে জানায়। এর পর স্কুলের শিক্ষকদের বিষয়টি জানালে তাৎক্ষনিকভাবে অন্য ৭-৮ জন ছাত্রীও তাদের সঙ্গে এমন আচরণ করা হয়েছে বলে জানান। শিক্ষক তোফায়েলের সকল অপকর্ম ফাঁস হয়ে যায়। লোকমুখে শোনা যাচ্ছে অন্ততপক্ষে অর্ধশত ছাত্রী ওই শিক্ষক কর্তৃক যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন।
বিষয়টি ছড়িয়ে পড়লে কৌশলে অভিযুক্ত শিক্ষক তোফায়েল আহমদ এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। বর্তমানে তার ব্যবহৃত মুঠোফোনটিও বন্ধ বলে জানান বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক খালেদা ইয়াছমিন পিঙ্কি।ঘটনার শিকার একাধিক শিক্ষার্থী জানান, হুজুর স্যারে (তোফায়েল আহমদ) খারাপ কাজ (ধর্ষণ) করতো শরীরের বিভিন্ন স্থানে হাত দিতো, কাউকে না বলার জন্য কোরান হাদিস ধরিয়ে ভয় দেখাতো। আর কাউকে বললে রুপালী পাগলীর মতো হয়ে যাবি বলে ভয় দেখাতো।
এ কারণে অনেকেই ভয়ে মুখ খুলেনি বলে জানান।এ খবর ছড়িয়ে পড়লে অভিবাবক ও গ্রামবাসীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। কোরান হাদিসের ভয় দেখিয়ে ছাত্রীদের অপকর্মের এমন ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবী করেন তারা। একই দাবি করেন সদর উপজেলা শিক্ষক সমিতির সভাপতি নজরুল ইসলাম মাষ্টারসহ সচেতন মহল।উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান মোল্লা জানান, খন্ডকালীন শিক্ষক কর্তৃক ছাত্রীদের যৌন হয়রাণির খবর পেয়ে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে।
এ ধরণের ঘটনার প্রমাণ পেলে দায়ী ব্যাক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া এ ধরণের আর কোন ঘটনা যেন আর না ঘটে সেজন্য সকল বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের সচেতন করা হবে বলে জানান তিনি।