যুবকের লাশ উদ্ধারের ঘটনায় প্রেমিকা গ্রেপ্তার

সোমবার দুপুরে খুলনা নগরীর পিকচার প্যালেস মোড়ের হোটেল আজমল প্লাজা থেকে যুবকের হাত-পা লাশ উদ্ধারের ঘটনায় প্রেমিকা মরিয়ম খাতুনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। নড়াইলের কালিয়া উপজেলার চাঁচুড়ি ইউনিয়নের লাঙ্গুলিয়া গ্রাম থেকে সোমবার সন্ধ্যায় প্রেমিকা মরিয়মকে গ্রেপ্তার করা হয়।পরে তাকে খুলনায় নিয়ে যাওয়া হয়।

নিহত প্রেমিক ইনসান কালিয়া উপজেলার চাঁচুড়ি গ্রামের ইঞ্জিল মোল্যার ছেলে।

পুলিশ জানায়, গত ২৩ জুন এক যুবক ও যুবতী খুলনার পিকচার প্যালেস মোড়ের হোটেল আজমল প্লাজার পঞ্চম তলার ৫০২ নম্বর কক্ষে ওঠেন। তবে হোটেল রেজিস্টারে তাদের কোনো নাম, ঠিকানাসহ কোনো তথ্য লিপিবদ্ধ ছিল না। এরই মধ্যে গত সোমবার দুপুরে পুলিশ ওই কক্ষের দরজা ভেঙে ওই যুবকের (ইনসান) লাশ উদ্ধার করে। নিহত ইনসানের দুই হাত ও পা বাঁধা এবং মুখ ও পুরুষাঙ্গ আগুনে ঝলসানো ছিল। এদিকে তার সাথে হোটেলে ওঠা যুবতীকে ওই সময়ে ওখানে পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে পুলিশি তদন্তে বেরিয়ে আসে হোটেলে নিহত অজ্ঞাত ওই যুবকের নাম ইনসান মোল্যা। বাড়ি নড়াইলের চাঁচুড়ি গ্রামে।

নিহত ইনসানের ভাই চাঁচুড়ি ইউপি সদস্য তৌরুত মোল্যা জানান, গত ২১ জুন সকাল ৮টার দিকে তার ভাই চাঁচুড়ি বাজারে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়। এরপর আর বাড়ি ফিরে আসেনি। অনেক খোঁজাখুজির পর সন্ধান না পাওয়ায় পরেরদিন (শুক্রবার) রাত ১০টার দিকে কালিয়া থানায় ইনসানের বোন আরিফা বেগম সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।

ইনসানের ভাই তৌরুত মোল্যা আরো জানান, সোমবার সকাল ১০টার দিকে একটি নাম্বার থেকে তৌরুতের মোবাইল ফোনে কল করা হয়। ফোন কলের ওই ব্যক্তি ইনসানের মুক্তিপণের জন্য ৬০ হাজার টাকা দাবি করে। তৌরুত খুলনায় গিয়ে ফোন কলের ওই ব্যক্তির সাথে সোমবার বিকালে যোগাযোগের চেষ্টাকালে জানতে পারেন হোটেল আজমল প্লাজায় একটি অজ্ঞাত লাশ পাওয়া গেছে। হোটেলে গিয়ে ছোট ভাই ইনসানের লাশ শনাক্ত করেন তিনি।

এদিকে, জানাজা শেষে ইনসানকে মঙ্গলবার বিকালে চাঁচুড়ি গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।

জানা যায়, কালিয়া উপজেলার লাঙ্গুলিয়া গ্রামের কালাম বিশ্বাসের মেয়ে মরিয়ম খাতুন সঙ্গে ইনসানের দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এরপর ২০১৬ সালের অক্টোবরে ভারতে গিয়ে তারা স্বামী-স্ত্রী হিসেবে বসবাস শুরু করেন। কিন্তু কালিয়ায় ফিরে এসে ইনসান মরিয়মকে স্ত্রীর মর্যাদা দিতে অস্বীকৃতি জানায় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এদিকে ২০১৭ সালের ২২ নভেম্বর ইনসান অন্যত্র বিয়ে করেন। এরপর ১১ ডিসেম্বর (২০১৭) ইনসান মোল্যাকে আসামি করে কালিয়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন মরিয়ম। এ মামলায় কারাভোগের পর ইনসান বর্তমানে জামিনে ছিলেন। ইনসান জামিনে আসার পর মামলা থেকে রক্ষা পেতে মরিয়মকে আবার বিয়ের কথা বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।

কালিয়া থানার ওসি শেখ শমসের আলী জানান, তৌরুত মোল্যা বাদী হয়ে খুলনা সদর থানায় মরিয়মের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৫-৬ জনের নামে হত্যা মামলা করেছেন। মরিয়মকে গ্রেপ্তারের পর খুলনায় হস্তান্তর করা হয়েছে।