গাজীপুরের পুলিশ সুপার হারুনুর রশীদকে কেন প্রত্যাহার করতে হবে, সেই প্রশ্ন রেখেছেন আওয়ামী লীগ নেতা এইচ টি ইমাম। আর তিনি খারাপ কী করেছেন, সেটিও বিএনপির কাছে জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা।
ভোটের আগের দিন সোমবার নির্বাচন কমিশনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার-সিইসির সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নে এই পাল্টা প্রশ্ন রাখেন তিনি।
গাজীপুরে ভোটের লড়াই শুরুর পর থেকেই পুলিশ সুপার হারুনকে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে এসেছে। অন্তত তিন দফা নির্বাচন কমিশনে গিয়ে এই অনুরোধ করেন দলটির নেতারা। সব শেষ রবিবার আগেও দলের নেতারা এই দাবি জানিয়ে এসেছেন।
এসপি হারুনকে প্রত্যাহারের দাবির বিষয়ে এক প্রশ্নে এইচ টি ইমাম সাংবাদিকদেরকে বলেন, ‘বিএনপি বললেই গাজীপুরের এসপি হারুনকে প্রত্যাহার করার কোনও কারণ নেই।’
‘তাছাড়া এসপি হারুন খারাপ কেন, সেটা তো বিএনপি বলছে না। একজন মানুষের ভাবমূর্তি নষ্ট করা সহজ। এটা কেন করা হবে।’
গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে কমিশনের ভূমিকায় আওয়ামী লীগ সন্তুষ্ট বলেও জানান প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা।
মঙ্গলবার আয়তনের দিক থেকে দেশের সবচেয়ে বড় সিটি করপোরেশনে ভোট হবে। মেয়রের পাশাপাশি ৫৭ জন সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবং ১৯ জন সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর নির্বাচন করবেন সাড়ে ১১ লাখ ভোটার।
গাজীপুরে নির্বাচনের আনুষ্ঠানিকতা শুরুর পর গত ১৭ এপ্রিল বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল নির্বাচন কমিশনে গিয়ে ভোটে সেনা মোতায়েনের পাশাপাশি এসপি হারুনকে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আসে।
তবে নির্বাচন কমিশনের সচিব হেলালুদ্দীন আহমেদ গত ২৭ এপ্রিল গণমাধ্যমকর্মীদেরকে বলেন, তারা এসপি হারুনকে প্রত্যাহারের কোনো যুক্তি খুঁজে পাচ্ছেন না।
এরপরও ৩ মে দলের আরেকটি প্রতিনিধি দল গিয়েও আবারও হারুনকে প্রত্যাহারের দাবি জানায়।
গাজীপুরের এসপি হারুনুর রশীদের বিষয়ে বিএনপির আপত্তি পুরনো। ২০১১ সালে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে সে সময়ের বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নাল আবদীন ফারুককে পিটুনির ঘটনায় হারুন সেখানে ছিলেন। সে সময় তিনি ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও অঞ্চলের সহকারী উপকমিশনার ছিলেন।
ওই ঘটনার কিছুদিন পর হারুনের পদোন্নতি হয় এবং পরে তিনি গাজীপুরের পুলিশ সুপার হিসেবে নিয়োগ পান। কোনো জেলায় এসপি হিসেবে এত বছর থাকা নিয়ে প্রশ্ন আছে বিএনপির।
দুই বছর আগে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের সময় গাজীপুরের শ্রীপুরে এক ইউপি সদস্য প্রার্থীকে কুপিয়ে হত্যা এবং নির্বাচন সংক্রান্ত নানা অভিযোগের পর হারুনকে ২০১৬ সালের ২২ এপ্রিল প্রত্যাহার করে নির্বাচন কমিশন। পরে তাকে পুনর্বহাল করা হয়।
বিএনপির অভিযোগ, এসপি হারুন তার দলের কর্মী সমর্থকদেরকে হয়রানি করছেন। তিনি দায়িত্বে থাকলে বিএনপির সমর্থকরা নির্ভয়ে কেন্দ্রে যেতে পারবেন না।
তবে বিএনপির এই অভিযোগ নিয়ে এসপি হারুন কখনও কথা বলেননি।