চট্টগ্রামে ঈদে ফয়’স লেকে চাইনিজ ব্যবসার সাইবোর্ড লাগিয়ে রমরমা যৌন ব্যবসা, প্রশাসন নীরব

বাইরের সাইনবোর্ডে লেখা আছে মিনি চাইনিজ। দরজা খুলে ভেতরে ঢুকলেই দেখা মিলবে ছোট ছোট কক্ষ। আলো আধারির মিশেলে থাকা এসব কক্ষে চলে অনৈতিক কর্মকান্ড। ফয়’স লেকের কনকর্ড বিল্ডিং ১ থেকে ৪ ও বিভিন্ন রিসোর্ট এবং আবাসিক ভবনে দিন দুপুরে গত ১০ বছর ধরে প্রকাশ্যে এসব অনৈতিক কর্মকান্ড চলে আসলেও প্রশাসন নির্বিকার। মাঝে মধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান চললেও বন্ধ হয়না এসব অনৈতিক কাজ।

ফয়’স লেক প্রধান ফটকের পর থেকে রাস্তার ডান পাশের কনকর্ড বিল্ডিং ১ থেকে ৪ এ অবস্থিত উপর ও নিচতলার নামধারী সব মিনি চাইনিজ রেস্টুরেন্ট দোকানে অনৈতিক কাজ চলে। এছাড়া চিড়িয়াখানা এবং ফয়’স লেকের ভেতরের গেইটের আশপাশে আবাসিক হোটেল, ছোট ছোট দোকানেও চলছে এসব অনৈতিক কাজ।

ছোট-বড় রেস্টুরেন্ট, আবাসিক হোটেল, আবাসিক ফ্ল্যাট মিলিয়ে ফয়’স লেকে অন্তত ৫০টির অধিক স্থানে অনৈতিক কাজ চলছে বলে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।

কনকর্ড এর চারটি বিল্ডিংয়ে অবস্থিত লেকভিউ রিসোর্ট, রোজ বেলী রিসোর্ট, এ্যাপোলো কফি হাউজ, আনন্দ আড্ডা এবং রিয়েল পার্ক রিসোর্ট, আবুল হোসেন ফুড কর্ণারে গিয়ে দেখা যায়, প্রকাশ্য দিবালোকে অনৈতিক কার্যকলাপ চলছেই। চট্টগ্রাম শহরের পেশাদার যৌনকর্মীদের দ্বারা পরিচালিত এসব পতিতালয়ের কারণে ফয়’স লেক এলাকায় বসবাসরত অধিবাসীরা রীতিমতো বিব্রত।

আবুল হোসেন ফুড কর্ণারের স্বত্তাধিকারী আবুল হোসেন ভূইয়া বলেন, পর্যটন এলাকায় যা চলে এখানে তাই চলে। প্রতি রেস্টুরেন্ট খুলশী থানায় মাসিক ১০ হাজার টাকা চাঁদা দেন বলে দাবি করেন। থানার পক্ষ থেকে জনৈক সবুজ এসে এসব চাঁদা নিয়ে যান বলেও জানান তিনি।

পরিচয় গোপন করে একাধিক রেস্টুরেন্ট কর্মীর সাথে টেলিফোনে যোগাযোগ করা হলে তারা বলেন, এখানে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে সব কাজ চলে। এর পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক বড়ভাই শেল্টারে থাকায় কোন ঝামেলা হয়না এখানে।

ফয়’স লেক এলাকায় বসবাসরত একাধিক লোক জানায়, পরিবার পরিজন নিয়ে ফয়’স লেক রাস্তার পূর্ব পাশ দিয়ে হাঁটা যায় না। এসব দোকানের সামনে বসে থাকা যুবকরা গ্রাহক ভেবে ভেতরে নিয়ে যাওয়ার জন্য টানা হেঁচড়া করে।

ইউএসটিসির একজন শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ফয়’স লেকে প্রকাশ্য দিবালোকে যেসব অনৈতিক কর্মকান্ড চলে বাংলাদেশের অন্য কোন পর্যটন এলাকায় এসব চিত্র আছে কিনা আমার জানা নেই। প্রশাসন যদি ম্যানেজ হয়ে এসব অপকর্মের স্বীকৃতি দেয় তাহলে এর প্রতিবাদ করবে কে?

ফয়’স লেক কনকর্ড এমিউজমেন্ট পার্কের এজিএম সাইফুদ্দিন শাহীন জানান, মিনি চাইনিজ রেস্টুরেন্টের ব্যবসা করার শর্তে এসব প্রতিষ্ঠানকে দোকান ভাড়া দেওয়া হয়। কিন্তু বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের শেল্টারে এখানে অনৈতিক কাজ পরিচালিত হচ্ছে। আমাদের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট দোকানদার এবং প্রশাসনের কাছে আমরা লিখিতভাবে জানিয়েছি। রাজনৈতিক শেল্টারের কারণে এসব অনৈতিক কাজ বন্ধ করা যাচ্ছে না।

খুলশী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ আবু নাছির বলেন, পুলিশকে টাকা দিয়ে অনৈতিক কাজ পরিচালনা করার অভিযোগ একেবারে অসত্য। অনৈতিক কাজ বন্ধে আমরা আজই অভিযানে নামবো।

সুএ; Z0ombangla.com