বাড়ি ডাকাতির আগে- কুমিল্লা জুড়েই একটি আতঙ্কের নাম ছিল ডাকাত সুমন। তবে ডাকাতির চেয়ে ধর্ষণেই বেশি অমানবিক মজা পেত সুমন।
তাই প্রবাসীদের বাসায় ডাকাতির নাম করে হামলা করে নারী বা যুবতী মেয়েকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ধর্ষণ করাই ছিল তার নেশা। আর এই কারণেই দেবিদ্বারের লোকজনের কাছে সে ছিল একটি ভয়ানক আতঙ্ক।
গতকাল শুক্রবার দিবাগত মধ্যরাতে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে পুলিশের সঙ্গে ডাকাত দলের সদস্য সুমন নিহত হওয়ার খবরে এলাকার লোকজনের মাঝে স্বস্তি ফিরেছে।
স্থানীয়দের অনেকে আবার পুলিশদের ধন্যবাদ দিয়েছেন। নিহত ডাকাত সদস্য সুমন (৩৫) জেলার দেবিদ্বার উপজেলার কুরুইন গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে।
গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত সোয়া ১টার দিকে জেলার দেবিদ্বার-চান্দিনা সড়কের ছেচরাপুকুরিয়া রাস্তার মাথায় পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় নিজেদের (ডাকাত) গুলিতেই ডাকাত সুমন গুরুতর আহত হয়। পরে আহত ওই ডাকাত সদস্যকে উদ্ধার করে কুমেক হাসপাতালে নেয়ার পর ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
দেবিদ্বার থানা পুলিশের ওসি মো. মিজানুর রহমান জানান, কুখ্যাত ডাকাত সুমনের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত দেবিদ্বার, চান্দিনা, বুড়িচং, দাউদকান্দিসহ বিভিন্ন থানায় ডাকাতিসহ বিভিন্ন অভিযোগে ১৮টি মামলার সন্ধান পাওয়া গেছে। মামলার সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলেও জানান তিনি।
এলাকাবাসী জানায়, ডাকাত সুমন এলাকায় একটি আতঙ্ক হিসেবে পরিচিত ছিল। সে এলাকায় আসলেই কোনো না কোনো গ্রামে ডাকাতি হতো।
এলাকাবাসী আরও জানান, বিভিন্ন ডাকাতির ঘটনা পর্যালোচনায় বেড়িয়ে এসেছে সুমনের রোমহর্ষক কাহিনী। ডাকাতি করতে গিয়ে ধর্ষণই ছিল সুমনের নেশা।
তবে সামাজিক কারণে কেউই তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ না করে বিষয়টি চাপা রাখতো। এর আগে সে পুলিশের হাতে একাধিকবার গ্রেফতার হলেও জামিনে বেড়িয়ে এসে গ্রুপ নিয়ে কুমিল্লা জেলা ছাড়াও অন্যান্য স্থানে ডাকাতি করতো।
প্রসঙ্গত গত ১৯ আগষ্ট ২০১৬ তারিখ দিবাগত রাত্র অনু: ১২.৩০ এর দিকে ডাকাতির প্রস্তুতকালে বিহারমন্ডল গ্রাম সংলগ্ন বিলে অবস্থান নিয়েছিল সুমন ও তার সহযোগীরা।
পরে এলাকাবাসী বুঝতে পেরে তাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। জানা যায় তার নামে থানায় অনেক মামলা রয়েছে। এলাকাবাসীর মতে সকল অপরাধের সাথেই সম্পৃক্ত থাকে সুমন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার লোকজন জানান, পুলিশের অভিযানের ভয়ে সে বাড়িতে রাত্রিযাপন না করে গ্রুপ নিয়ে আশপাশের এলাকায় অবস্থান করতো এবং মাঝে মধ্যে এলাকায় এসে ডাকাতি করতো।
স্থানীয় একটি সূত্র জানায়, ডাকাতি করার আগে ডাকাত সুমন তার গ্রুপের সদস্যদের দিয়ে প্রবাসীদের বাড়িগুলো বেশি টার্গেট করতো। মালামাল লুটের আগে নারী ও যুবতী মেয়েদের অস্ত্রের মুখে ধর্ষণ করতো।
পরে এ ব্যাপারে দেবিদ্বার থানার এই কর্মকর্তা বলেন, ডাকাত সুমনের মৃত্যুর পর তার নিজ এলাকার লোকজনই মিষ্টি বিতরণ করে পুলিশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে।