মাত্র ছয় টাকায় ভরপেট ভাত-তরকারি পাওয়া যায় যেখানে!

দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির বাজারে উদরপূর্তি করে খেতে গেলে আগে পকেটের অবস্থার কথা ভাবতে হয়। পছন্দের কিছু খাবেন, অথচ পকেটে আছে অল্পকিছু টাকা। তাতে মনের মতো কোনো খাবার খাওয়া সম্ভব নয়, কারণ তাঁর দাম শুনলেই চোখ কপালে ওঠার উপক্রম। কিন্তু মাত্র ছয়টাকায় যদি সেরে ফেলা যায় মধ্যাহ্নভোজ, তাও কি সম্ভব!

ভাবছেন, এতে কম দামে খাবার পাওয়া যায় নাকি! পাশের দেশ ভারতের কলকাতায় রয়েছে এমন খাবারের ব্যবস্থা। অনেকেই জানে যে, ভারতের মুম্বাই বা দিল্লির তুলনায় কলকাতায় খাবার তুলনামূলক সস্তা। তাই বলে যে ছয় টাকায় পুরো বেলার খাবার হয়ে যাবে এটা ভাবাই যায়না। দক্ষিণ কলকাতার শিশুমঙ্গল হাসপাতালের বিপরীতের এই খাবারের ব্যবস্থা দেখা যায়। হাসপাতালের রোগীর স্বজন থেকে শুরু করে সব শ্রেণীর মানুষ এখানে খাচ্ছেন, কোনো দ্বিধাদ্বন্দ্ব ছাড়াই। তবে এখানে মাছ বা মাংসের কোনো আয়োজন নেই, তরকারিটা নিরামিষ। আর আছে ডাল।

এখানে খাওয়ার জন্য রীতিমতো লাইন হয়। ঘড়িতে সাড়ে ১২টা বাজার আগে থেকেই লাইনে দাঁড়িয়ে থাকে অনেক মানুষ। মাত্র ছয় টাকায় ভাত, ডাল আর তরকারি পাওয়া যাচ্ছে আর সেটা খাচ্ছে সব ধরনের মানুষ। বিক্রেতারা বলেন, প্রতিদিন তাঁদের দোকান থেকে দুইশো লোকের বেশি খাওয়া-দাওয়া সারেন। ক্রেতারা জানান, এই খাবারের মান যথেষ্ট ভালো, খেতেও সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যকর৷

এত কম দামে কীভাবে এত ভালো খাবার জানা দরকার। মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমারের সঙ্গে এই খাবারের প্রস্তাব নিয়ে দেখা করেন শহরের এক নামী স্থপতি৷ তাঁর প্রস্তাবে বিস্মিত হয়েছিলেন সামাজিক আন্দোলনের অন্যতম সেনাপতি দেবাশিষও। এক প্লেট ভাত, ডাল, সবজি তৈরি থেকে পরিবেশন পর্যন্ত খরচ পড়ছে ১০ টাকা। প্লেট পিছু নিজের পকেট থেকে ৪ টাকা ভরতুকি দিয়েই ছ’টাকায় পেট ভরিয়ে সামাজিক দায়িত্ব পালন করছেন ওই স্থপতি৷ এই ব্যবস্থা যাতে আরও ছড়িয়ে যেতে পারে, সেটাই চায় শহরবাসী।