আমার শরীরে অর্ধেক কাপড় থাকতো, অর্ধেক থাকতো না

আমার শরীরে- বাংলাদেশের বিপুল পরিমাণ জনগোষ্ঠী মাদকে আসক্ত হয়েছে পড়েছে। বেসরকারি হিসাব মতে এ সংখ্যা প্রায় ১ কোটির কাছাকাছি। মাদকসেবীদের মধ্যে পুরুষদের সংখ্যাই বেশি, তবে নারীরাও খুব একটা পিছিয়ে নেই।

দেশে এক নারী কীভাবে ইয়াবায় আসক্ত হয়েছিলেন সে বর্ণনা দিয়েছেন বিবিসি বাংলাকে। ওই নারীর বক্তব্যের কিছু অংশ প্রিয়.কমের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো। তবে সামাজিক কারণে নারীর নাম গোপন রাখা হলো।

‘আমার দ্বিতীয় স্বামীর মাধ্যমে ইয়াবার সাথে আমার পরিচয় হয়। তিনি একজন সরকারি কর্মকর্তা। সে আমাকে অনেক ভালোবাসতো। একদিন সে বাড়িতে অনেকগুলো ইয়াবা নিয়ে আসে।’

ওই নারী তার স্বামীর কাছে জানতে চান ট্যাবলেটের মতো দেখতে এগুলো কী? স্বামী তখন জানান, এটা খুব ভালো জিনিস। এখন এটা সবাই খায়, মেয়েরাও খায়। আর তুমি তো আমার স্ত্রী। সুতরাং তুমিও আমার সাথে খাবে। ওই নারী বলেন, ‘তখন আমি মনে করলাম, যদি তার সাথে বসে না খাই তাহলে হয়তো সে বাইরের মেয়েদের সাথে গিয়ে খাওয়া শুরু করবে। তখন আমি তার সাথে খাওয়া শুরু করি।’

এভাবে কয়েক মাস ধরে স্বামী-স্ত্রী মিলে বাড়িতে একসাথে ইয়াবা খেতে থাকেন।

ওই নারী বলেন, ‘তিন মাস পর আমি খুব অসুস্থ হয়ে পড়ি। এতো শুকিয়ে যাই যে আমাকে ৮০ বছরের বৃদ্ধ মহিলার মতো দেখাতো। শরীর পুরোটা কালো হয়ে গিয়েছিল। আমার শরীরে অর্ধেক কাপড় থাকতো, অর্ধেক থাকতো না। আমি সারাক্ষণ মাথা আঁচড়াতাম। মনে হতো মাথায় শুধু উকুন। যে-ই দেখবে সে-ই আমাকে পাগল মনে করতো।

মা যখন আসতো, তখন আমি তার সাথে খুব খারাপ আচরণ করতে শুরু করি। আমি চোখে অনেক কিছু দেখতে থাকি। মুরগির মাংস দেখলে মনে হতো তার ভেতরে অনেক কেঁচো। মাথার চামড়াকে মনে হতো লাল রক্ত। মনে হতো, মাথা থেকে রক্ত পড়ছে। খেতেও পারতাম না। কিছু মুখে দিলে সেটা রাবারের মতো শক্ত লাগতো।’

ইয়াবায় আসক্ত ওই নারী বলেন, ‘তখন আমি খুব অসুস্থ। আমার মা একদিন ভাত মেখে আমাকে খাওয়াতে যাবেন, তখন আমার মনে হলো আমাকে তিনি কেঁচো খাওয়াচ্ছেন। কিছুক্ষণ পর আমি বমি করতে শুরু করি। তখন তারা আমাকে আমার মায়ের বাসায় নিয়ে যায়। সেখানে আমাকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। স্বামীকে না জানিয়েও আমার চিকিৎসা চলতে থাকে।

মায়ের বাসায় তিন বছরের মতো ছিলাম। তারপর নিজের বাসায় চলে যাই। তখন আবার স্বামী প্রত্যেকদিন ইয়াবা নিয়ে আসতে শুরু করে। প্রতিদিন রাতে সে ইয়াবা খেতো। প্রত্যেক রাতে ২০টা করে খেতো। সে নিজে নষ্ট এবং তার নোংরামির শিকার আমিও হয়েছি। তারপর আমি আবারও ইয়াবাতে আসক্ত হয়ে পড়ি।’ সূত্র : প্রিয়.কম