একের পর এক উইকেট হারিয়ে যত সংগ্রহ বাংলাদেশের

নিউজিল্যান্ডের মাটিতে তাদেরই বিপক্ষে প্রথমবারের মতো এবার ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি ম্যাচ জিতেছিল বাংলাদেশ। ওয়ানডে হাতছাড়া হলেও, তাদের সামনে প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়েরও সুযোগ ছিল। দ্বিতীয় ম্যাচে সেটি হতে দেয়নি বেরসিক বৃষ্টি।

শেষ ম্যাচে আজ (রোববার) টস ভাগ্য সহায় হয়নি। চলমান সফরের সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটটিতে প্রথমবার ব্যাটিংয়ে নেমে ব্যর্থ টাইগার শিবির। কিউই অধিনায়ক মিচেল স্যান্টনারের ঘূর্ণিতে তারা মাত্র ১১০ রানে গুটিয়ে গেছে।

এর আগের দুটি ম্যাচ বাংলাদেশ সময় দুপুরে শুরু হলেও, আজ বল মাঠে গড়ায় ভোর ৬টায়। ফলে ঘুম ভেঙে টাইগার ভক্তদের কিছু বুঝে ওঠার আগেই চোখ ছানাবড়া।

কারণ বড় সংগ্রহ গড়ার চেয়ে টাইগারদের দ্রুত আউট হওয়ার প্রতিযোগিতাতেই যেন বেশি মনোযোগ ছিল! ৪ ওভারে মাত্র ১৬ রানে স্যান্টনার একাই নিয়েছেন ৪ উইকেট। বিপরীতে টাইগারদের পক্ষে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত সংগ্রহ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত’র করা ১৫ বলে ১৭ রান।

মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে এদিন একজন বাড়তি স্পিনার নিয়ে নামে সফরকারীরা। পেসার তানজিম হাসান সাকিবের পরিবর্তে নেওয়া হয়েছে স্পিনার তানভীর ইসলামকে। এছাড়া ইনজুরির কারণে আজও দলে নেই বাংলাদেশের ওপেনার লিটন দাস। স্বাভাবিকভাবেই তাই ওপেনিংয়ে কিছুটা ধারহীন বাংলাদেশ।

ওয়ানডেতে ব্যাট হাতে ঝড় তোলা সৌম্য সরকার আজ শুরুতেই ফিরেছেন। মূলত তাকে দিয়েই বিপর্যয়ের শুরু। ইনিংসের প্রথম ওভারে টিম সাউদির বলে কাভারে চার দিয়ে তিনি শুরু করেছিলেন।

চতুর্থ বলেই তিনি খেই হারান। কিউই পেসারের বল হালকা বাঁক খেয়ে ভেতরে ঢুকতেই লেগ বিফোরের আবেদন, আম্পায়ারের দেওয়া আউটের আবেদনের বিরুদ্ধে রিভিউ নিয়েছিলেন সৌম্য। কিন্তু আম্পায়ার্স কলে কাঁটা পড়ে টাইগারদের প্রথম উইকেট।

ওয়ানডাউনে নেমে নাজমুল হোসেন শান্তও শুরু করেছিলেন চার মেরে। অ্যাডাম মিলনের ওভারে তিনি পরপর দুটি চারের বাউন্ডারি খেলায় কিছুটা লড়াইয়ের জোশ পায় বাংলাদেশ।

কিন্তু পরের ওভারেই তরুণ পেসার বেন সিয়ার্স তাদের লাগাম টানেন। তাতে ওপেনার রনি তালুকদারেরও অবদান ছিল, তিনি টানা ডট বল খেলায় টাইগারদের চাপ বাড়ে। চাপ কমাতে অতি-আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন শান্ত। মিলনের বলে বাউন্ডারি মারার চেষ্টায় ক্যাচ দেন পয়েন্টে। ১৫ বলে তিনি ১৭ রান করেন।

পরের ওভারে সিয়ার্সের বলে আউট রনিও। কিউই পেসারের ইয়র্কারে তিনি এলবিডব্লিুউ হয়ে যান। তার বিদায় মাত্র ১০ রানে (১০ বল)। পেসারদের পর ঝলক শুরু কিউই অধিনায়ক মিচেল স্যান্টনারের। আফিফ হোসেন ও তাওহীদ হৃদয়রা তার বলে সুবিধা করতে পারছিলেন না। পরে ইশ সোধি আক্রমণে যোগ দিয়ে তাদের আরও ভড়কে দেন।

এরপর নিয়মিতে বিরতিতে আউট হয়ে ফিরেছেন আফিফ (১৩ বলে ১৪), হৃদয় (১৮ বলে ১৬), শেখ মেহেদী (১৩ বলে ৪) এবং শামীম হোসেন পাটওয়ারী (১৪ বলে ৯ রান)। টানা চার ব্যাটারই ফিরেছেন স্যান্টনারের বলে। কিউই অধিনায়কের ঘূর্ণি তাকে ফাইফারও এনে দেওয়ার সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাকে ৪ উইকেট নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয়। ৪ ওভারে তিনি দিয়েছেন মাত্র ১৬ রান।

বাংলাদেশের টেল-এন্ডারে আর ব্যতিক্রম কিছু হয়নি। তবে তাদের প্রচেষ্টায় দলীয় রান তিন অঙ্ক পেরোয়। সিয়ার্সের বলে শরীফুলের বিদায়ে ৮৭ রানে ৮ উইকেট শেষ বাংলাদেশের। ফলে শেষ দুই উইকেটে ২৩ রানই তাদের বড় পাওয়া, যেখানে রিশাদের ব্যাটে আসে ১০ রান। যদিও সফরকারীদের পুরো ওভার খেলা হয়নি। ১৯.২ ওভারেই ১১০ রানে অলআউট বাংলাদেশ।

কিউইদের হয়ে স্যান্টনার ছাড়া সাউদি, মিলনে ও সিয়ার্স প্রত্যেকে ২টি করে উইকেট নেন। কেবল সোধি উইকেট না পেলেও, নিয়ন্ত্রিত বোলিং করেন তিনি।