ব্যাংকিং চ্যানেলে দেশে পাঠানো রেমিট্যান্সের প্রতি ডলারের বিপরীতে প্রবাসীরা প্রণোদনাসহ সর্বোচ্চ ১১২ টাকা ২৪ পয়সা পাবেন। এর মধ্যে ব্যাংক থেকে পাবেন ১০৯ টাকা ৫০ পয়সা। আর সরকার থেকে প্রণোদনা আড়াই শতাংশ হিসাবে পাবেন ২ টাকা ৭৪ পয়সা।
গত রোববার থেকে যেসব রেমিট্যান্সের ডলার ব্যাংকিং চ্যানেল বা এক্সচেঞ্জ হাউজে জমা হবে সেগুলোর বিপরীতে ওই হারে টাকা পাওয়া যাবে। ডলারের দাম বাড়ানোর কারণে প্রবাসীরাও রেমিট্যান্সের বিপরীতে বাড়তি অর্থ পাচ্ছেন।
সূত্র জানায়, আগে প্রবাসীরা ব্যাংকিং চ্যানেলে পাঠানো প্রতি ডলারে প্রণোদনাসহ পেতেন ১১১ টাকা ৭২ পয়সা। এর মধ্যে প্রতি ডলারে পেতেন ১০৯ টাকা ও প্রণোদনা হিসাবে পেতেন ২ টাকা ৭২ পয়সা। সব মিলে এখন প্রতি ডলারে ৫২ পয়সা বেশি পাবেন।
রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে সরকার ব্যাংকিং চ্যানেলে পাঠানো ডলারের বিপরীতে প্রণোদনা হিসাবে আড়াই শতাংশ বাড়তি অর্থ দিচ্ছে। এর সঙ্গে ডলারের বিনিময় হার বাড়ানোর কারণেও প্রবাসীরা বাড়তি অর্থ পাচ্ছেন।
কিন্তু রেমিট্যান্সের বিপরীতে দেশের ব্যাংকিং চ্যানেলে ফি মওকুফ করা হলেও বিদেশি এক্সচেঞ্জ হাউজের ফি পরিশোধ করতে হচ্ছে। এছাড়া বিদেশে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্সের অর্থ পাঠাতে ব্যাংক হিসাব পরিচালনায়ও অর্থ খরচ হচ্ছে। এ কারণে বাংলাদেশে বিদেশ থেকে রেমিট্যান্স পাঠানোর খরচ এখনো সর্বোচ্চ।
যে কারণে রেমিট্যান্সের একটি অংশ সার্ভিস চার্জ হিসাবে চলে যাচ্ছে। এতে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স কমছে। এর বিপরীতে হুন্ডিতে বাড়ছে। কারণ হুন্ডিতে কোনো ফি দেওয়া হচ্ছে না। পাশাপাশি ডলারের দামও বেশি পাচ্ছেন। বর্তমানে প্রতি ডলারে প্রবাসীরা পাচ্ছেন ১১৭ থেকে ১১৮ টাকা। ব্যাংকে পাচ্ছেন সর্বোচ্চ ১১২ টাকা ২৪ পয়সা।সার্ভিস বাদ দিলে ১১০ টাকার মতো পাচ্ছেন। ব্যাংকের চেয়ে হুন্ডিতে রেমিট্যান্স এলে বেশি পাচ্ছেন ৭ থেকে ৮ টাকা। এ কারণে ব্যাংকের চেয়ে হুন্ডিতে রেমিট্যান্স আনার প্রবণতা বেড়েছে। তবে এতে ঝুঁকির মাত্রা বেশি। অনেকে হুন্ডিতে রেমিট্যান্স এনে প্রতারিত হয়েছেন।
সূত্র জানায়, সাম্প্রতিক সময়ে দেশে রেমিট্যান্স প্রবাহ কমে গেছে। তাই রেমিট্যান্স বাড়াতে সরকার থেকে বিকল্প আরও কী ব্যবস্থা নেওয়া যায় তা নিয়ে চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। এর মধ্যে প্রণোদনার হার বাড়ানোর কথা ওঠেছিল।
রপ্তানির ডলারের বিপরীতে বিভিন্ন খাতে ২ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত বিকল্প নগদ সহায়তা বাবদ প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তা ৪ শতাংশের বেশি। এ কারণে রেমিট্যান্সেও প্রণোদনা বাড়ানোর কথা উঠেছে। কিন্তু আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের শর্তের কারণে তা বাড়ানো যাচ্ছে না। রেমিট্যান্সের ক্ষেত্রে নগদ সহায়তা ৩ শতাংশের নিচে থাকতে হবে। বর্তমানে দেওয়া হচ্ছে আড়াই শতাংশ। ফলে এটি আর বাড়ানো যাচ্ছে না।
আগে সরকারি প্রণোদনার বাইরে অনেক ব্যাংক আরও এক শতাংশ বাড়তি প্রণোদনা দিতেন। বর্তমানে ব্যাংকগুলো তারল্য সংকটে পড়ায় এ খাতে বাড়তি প্রণোদনা দিতে পারছেন না। তবে বিভিন্ন ব্যাংক রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে নানামুখী সুবিধা দিচ্ছে। এর মধ্যে বিভিন্ন ধরনের পুরস্কার, ছাড়, লটারিসহ নানা ধরনের প্রণোদনা।