ঈদের দিন সুইডেনে কোরআন পোড়ানোর ঘটনা আগেও ঘটেছিল। পরে এই ঘটনা নিয়ে বিশ্বজুড়ে তীব্র নিন্দার মুখে পড়ে দেশটি। তারপরও এবার মুসলিম ধর্মীয় বিশেষ এই দিনটিতে কোরআন পোড়ানোর অনুমতি দিয়েছে সুইডিশ আদালত।
বুধবার ডয়েচ ভেলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমের প্রধান মসজিদের সামনে ওই কোরআন পোড়ানোর ইভেন্ট অনুষ্ঠিত হবে।
জানা গেছে, কোরআন পোড়ানোর এ ধরনের অনুষ্ঠানের জন্য অতীতে ন্যাটোতে সুইডেনের যোগদানের বিষয়ে বিরোধিতা করেছিল তুরস্ক। তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিস্যেপ তাইয়েপ এরদোয়ান সুইডেনে এ ধরনের ঘটনার তীব্র নিন্দাও জানিয়েছিলেন। তারপরও এবার ঈদে কোরআন পোড়ানোর অনুষ্ঠানে সম্মতি দিয়েছে সুইডিশ কর্তৃপক্ষ।
এ ধরনের ঘটনায় সম্মতি দেওয়ার বিষয়ে সুইডিশ আদালত যুক্তি দিয়েছে, ‘কোরআন পোড়ানোর ফলে নিরাপত্তা ঝুঁকি এবং ফলাফলগুলো এমন প্রকৃতির নয় যে, বর্তমান আইন একটি সাধারণ সমাবেশের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করতে পারে।’
আয়োজকদের উদ্দেশে আরও বলা হয়, ‘পুলিশ বাহিনীও তাই আপনাদের সমাবেশের আবেদনে অনুমতি দেবে।’
তবে এ বিষয়ে আদালতের সঙ্গে দেশটির পুলিশ বাহিনীর কিছুটা দ্বিমত রয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়ে, সুইডেনের অভিবাসন বিরোধী এবং মুসলিম বিদ্বেষী উগ্র ডানপন্থীরা প্রায়ই কোরআন পুড়িয়ে থাকে। ডেনিশ-সুইডিশ ডানপন্থী নেতা রাসমুস পলুদান তাঁর সমর্থকদের এ কাজে উৎসাহ দিতেন। যদিও এবারের কোরআন পোড়ানোর অনুষ্ঠানে পলুদান কোনো ভূমিকা রাখেননি। এবার কোরআন পোড়ানোর আয়োজক একজন ইরাকি শরণার্থী। তিনি কোরআন নিষিদ্ধ করার পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছেন। ধারণা করা হচ্ছে, এবার কোরআন পোড়ানোর ইভেন্টে মাত্র দুজন ব্যক্তি অংশ নেবেন।
জানা গেছে, বই পোড়ানোর মতো ঘটনায় সহজেই অনুমতি পাওয়া যায় সুইডেনে। যদিও গত ফেব্রুয়ারিতে দেশটিতে ন্যাটো বিরোধী একটি প্রতিবাদ কর্মসূচিতে কোরআন পোড়ানোর পরিকল্পনা ছিল অংশগ্রহণকারীদের। পরে ওই কর্মসূচিতে বাধা প্রদান করে দেশটির পুলিশ।
এর আগে সুইডেনে তুর্কি দূতাবাসের সামনেও কোরআন পুড়িয়েছিল উগ্র ডানপন্থীরা। এ ঘটনার সূত্র ধরে পরে সুইডিশ প্রতিরক্ষামন্ত্রীর আঙ্কারা সফর নাকচ করে দেয় তুরস্ক। তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান ঘোষণা দেন—সুইডেন আর কখনোই তুরস্কের সমর্থন পাবে না।
এদিকে তুরস্কের ভেটো প্রদান সত্ত্বেও সুইডিশ প্রধানমন্ত্রী এখনো আশা করছেন, তার দেশ শিগগিরই ন্যাটোতে যোগদান করবে।