ইংলিশদের বিপক্ষে ইতিহাস গড়া এক দারুণ সময় পার করছে বাংলাদেশ। প্রথমবারের মতো যে কোনো ফরম্যাটে টাইগাররা তাদের সিরিজ হারিয়েছে। তবে পরিসংখ্যান ও বাস্তবিকভাবে যে ফরম্যাটটিতে বাংলাদেশকে দুর্বল ভাবা হতো, সেই টি-টোয়েন্টিতেই তারা এই কীর্তি গড়েছে। পুরো সিরিজজুড়ে ব্যাটে দ্যুতি ছড়িয়েছেন ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্ত। তাকে নিয়ে স্তুতি জানিয়েছেন ইংল্যান্ডেরই সাবেক অধিনায়ক নাসের হুসেইন।
রোববার (১২ মার্চ) রাত নামতেই উৎসবে মাতে বাংলাদেশ। ক্রিকেটে বাংলাদেশের জন্য গর্বিত হওয়ায় মতো সময় উপহার দিয়েছে সাকিব আল হাসানের দল। প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে টাইগাররা দলীয়ভাবে জিতলেও, দ্বিতীয় ম্যাচে লাইমলাইটে ছিলেন বোলাররা। তাদের অসাধারণ নৈপুণ্যে মাত্র ১১৭ রানেই গুটিয়ে যায় সফরকারীদের ইনিংস। এরপর ব্যাটারদের একের পর এক বিদায়ের সঙ্গে পুরো আলো কেড়ে নেন শান্ত। ওপেনিংয়ে নামার পর তিনি যখন মাঠ ছাড়ছেন, ততক্ষণে দলের ওপর থেকে ঘনীভূত কালো মেঘ পুরোপুরি সরে গেছে। তার জায়গায় চারপাশ আলোকিত করা সূর্য উঠে এ দেশের ক্রিকেট আকাশে।
বাংলাদেশের জয় মানেই বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংলিশদের হতাশা। তাদের সেই হতাশার প্রেক্ষাপট নিয়ে ময়নাতদন্ত চালিয়েছেন সাবেক ক্রিকেটার ও বর্তমানে ধারাভাষ্য বক্সে পরিচিত মুখ নাসের হুসেইন। দেশটির সংবাদমাধ্যম স্কাই স্পোর্টসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘বাংলাদেশ খুব সুন্দর খেলেছে। তারা বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে ২-০ ব্যবধানে হারিয়েছে, যা মাঠে তাদের ভয়ঙ্কর পারফরম্যান্সেরই ফল।’
‘শান্ত বড় তারকা হতে যাচ্ছে। এরকম আরও বেশ কয়েকজন দুর্দান্ত ক্রিকেটার প্রয়োজন বাংলাদেশের। তাদের জন্য এটি অনেক বড় জয়।’
নাসের হুসেইন
এরপর ইংলিশ অধিনায়ক জস বাটলারের নেতৃত্বের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘ইংল্যান্ড মাঠ এবং মাঠের বাইরে তাদের সেরাটা খেলতে পারেনি। এমনকি বাটলারও তার সেরাটা দিতে পারেনি আজ (গতকাল)। তার উচিত ছিল ওপেনিংয়ে ব্যাটে নামা। এছাড়া ফিল্ডার সেট করা এবং বোলার ঠিক করার জন্য সে অন্য কাউকে জিজ্ঞেস করতে হয়েছে। ম্যাচের ১৯তম ওভারে এসে তার এই দ্বিধান্বিত মনোভাব বড় রিস্ক, অনেক বড় রিস্ক। এরপর কোনো ওভার না করা বোলারকে (ক্রিস জর্ডান) দিয়েই ওই ওভার করানো হল।’
তবে আদিল রশিদের প্রশংসা করেছেন নাসের হুসেইন, ‘রশিদ ভালো বল করেছে। মাঝেমধ্যে উপমহাদেশের খেলায় সে নির্দিষ্ট গতিতে বল করে। তবে আমার মনে হয়, তাদের আরেকটু আক্রমণাত্মক হওয়া উচিত ছিল। তোমার সবচেয়ে ভালো স্পিনার দিয়ে আরও বেশি আক্রমণ চালানো উচিত।’
মিরপুর শের-ই বাংলায় সহজ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে অবশ্য শুরু থেকেই নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে বাংলাদেশ। ইংলিশদের মধ্যে সবচেয়ে সফল বোলার ছিলেন জোফরা আর্চার। তবে ডেথ ওভারের আগেই তার স্পেল শেষ হয়ে যায়। এরপর ১৯তম ওভারে এসে কোনো ওভার না করা জর্ডানের হাতে বল তুলে দেন বাটলার। তার ওভারে পরপর দুই বলে ৪ মেরে টাইগারদের জয়ের বন্দরে নিয়ে যান তাসকিন আহমেদ।